ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

বাগেরহাট-৩ আসন

নির্বাচনোত্তর স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের হামলায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
নির্বাচনোত্তর স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের হামলায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত

বাগেরহাট: বাগেরহাট-৩ আসন (রামপাল ও মোংলা) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারদারের কর্মী বাহিনীর হামলায় নৌকা প্রতীকের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নৌকায় ভোট দেওয়ায় সংখ্যালঘুদের ভিটেমাটি ছেড়ে ভারতে পাঠানোর হুমকি-ভয়ভীতিও দেখানো হচ্ছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন উপজেলা এলাকা জুড়ে যে হামলা, ভাঙচুর ও নির্যাতনসহ তাণ্ডবলীলা চালিয়েছেন তা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।  

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে মোংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন সুন্দরবন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সুন্দরবন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কবির উদ্দিন শেখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্বাচনোত্তর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনী মোংলা উপজেলা এলাকা জুড়ে তাণ্ডব চালিয়ে ছিল। তাদের ভয়ে এখনও অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন নৌকা প্রতীকের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। আহতরা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিশেষ করে তাদের তাণ্ডবে সংখ্যালঘু নেতাকর্মীরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। কিন্তু এখন নিজেদের অপরাধ কর্মকাণ্ড আড়াল করতে ও নৌকার নেতাকর্মীদের ওপরে উল্টো দোষ চাপাতে নানা ধরনের অপ্রচার এবং অপচেষ্টা লিপ্ত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা।  

নৌকার প্রার্থী বিজয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পরাজয়ের আক্রোশে তারা এখন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের জড়িয়ে ও সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভেদসহ সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক বিনষ্টে কতিপয় লোকজনকে ভাড়া করে একটি সংবাদ সম্মেলন করিয়েছেন। মূলত নৌকার নেতাদের রাজনৈতিকভাবে হয়রানি ও হেয়প্রতিপন্নের উদ্দেশ্যে তা করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত।  

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের আগেও স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন নানা অপপ্রচার চালিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারদারের ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী এক পথসভায় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নৌকা প্রতীক পেয়ে সুন্দরবন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া ইকরাম ইজারদার ‘নারী নেতৃত্ব হারাম, আমরা গজবের মধ্যে আছি’ এমন সংবিধান ও আইন পরিপন্থি বক্তব্য দিয়ে সারাদেশের নারী সমাজের মর্যাদা ক্ষুণ্নসহ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুন নাহারকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভোট না দেওয়ার উদ্দেশ্যে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন।  

এছাড়াও নির্বাচনের আগে তারা আমাদের লোকজনকে মারধর ও হয়রানি করেছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের হামলা, ভাঙচুর, নির্যাতন, সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগের হুমকি ও নারী নেতৃত্ব হারাম বলে বিতর্কিত বক্তব্যের বিষয়গুলো আড়াল করতে তারা কৌশলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা প্রকার মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপস্থাপন করা হয়।  

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী বাহিনীর হামলা, অত্যাচার, নির্যাতন ও সংখ্যালঘুদেরকে ভীতি প্রদর্শনের ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের চেয়ে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মোংলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার, পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আ. রহমান, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শেখ আব্দুস সালাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জসিম, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ইস্রাফিল হাওলাদারসহ অন্যান্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের  লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদার বলেন, আসলে আমি বা আমার লোকজন নৌকার কোনো কর্মীকে মারধর ও হুমকি-ধামকি দেয়নি। মূলত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে নৌকার লোকজন আমার লোকজনকে মারধর ও হয়রানি করেছে। এখন আমাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।