ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

গণতন্ত্র মঞ্চের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪
গণতন্ত্র মঞ্চের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড গণতন্ত্র মঞ্চের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক লোপাট ও অর্থ পাচারের প্রতিবাদে সচিবালয় অভিমুখে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ মিছিলে দুই দফা লাঠি চার্জ করেছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের লাঠি চার্জে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।  

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক লোপাট ও অর্থ পাচারের প্রতিবাদে সমাবেশ করে গণতন্ত্র মঞ্চ। সমাবেশ শেষে সচিবালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গুলিস্থানের জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়ে। এ সময় মঞ্চের নেতাকর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হয় পুলিশ।  

দেখা যায়, গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীদের পুলিশ বাধা দিতে চাইলে তারা পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুলিশ প্রথম দফা লাঠি চার্জ করে। এতে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকিসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরাও পুলিশের ওপর চড়াও হন।  

পরে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাকর্মীরা তাদের সেখান থেকে উঠয়ে নিয়ে যেতে চাইলে তাদের ওপর আবারও লাঠি চার্জ করে পুলিশ সদস্যরা।

ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি শাহ আলম মোহাম্মদ আক্তারুল ইসলাম বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা অনুমতি ছাড়াই এখানে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসেছেন।  আমরা তাদের বারবার বলেছি যে, তাদের এখানে অনুমতি নেই। কিন্তু ওনারা আমাদের কথা শুনেননি। ওনারা আমাদের কথা দিয়েছিলেন যে ওনারা সচিবালয়ের সামনে এসে শান্তিপূর্ণ মিছিল করে চলে যাবেন। কিন্তু ওনারা আমাদের দেওয়া ব্যারিকেড অতিক্রম করে সচিবালায় ঢোকার চেষ্টা করেছেন। আমরা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও ওনারা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢুকতে চেয়েছেন।  

তিনি বলেন, যারা ব্যারিকেডগুলো ধাক্কাধাক্কি করছিল তাদের দেখেই মনে হচ্ছিল এরা ব্যারিকেড ভাঙার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোক। আমাদের মনে হয়েছে ওনারা এই ব্যারিকেড ভাঙার জন্য লোক ভাড়া করে নিয়ে এসেছেন।

কত জন আটক হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা লাঠি হাতে নিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছেন আমরা তাদের মধ্য থেকে দু-একজনকে আটক করেছি। তবে কতজন এখন পর্যন্ত আটক হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কত জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওনারা বলছেন ৫০ জন আহত হয়েছেন কিন্তু আপনারা ভিডিও দেখলে এটা বিশ্লেষণ করতে পারবেন যে, আসলে ওনারা ৫০ জন ছিলেন কিনা। আর আমাদের কতজন আহত হয়েছেন তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।

এ সময় পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে। আমাদের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিকে অনেক মেরেছে পুলিশ। তিনিও আহত, তাকে নিয়ে এখন আমরা হসপিটালে যাব।

মিছিলের আগে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, একটা মহল এই সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে আছে। সরকার মেগা প্রকল্প করে মেগা লুটপাটের জন্য। এই লুটের টাকা সবাই ভাগবাটোয়ারা করে নিচ্ছে।  

জনগণকে মাঠে নামার আহ্বান জানিয়ে সাকি বলেন, মাঠে না নামলে এই সরকারকে হঠানো যাবে না। বিদেশিদের ওপর ভরসা করবেন না তারা শুধু সুবিধা নেয়। জনগণের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই এই সরকারকে বিদায় করে আমাদের জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে।

সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার যতই হাবভাব দেখাক না কেন রোজায় দাম কমাতে পারবে না। বাংলাদেশ এখন যেভাবে চলে, এর থেকে খারাপভাবে একটা দেশ চলতে পারে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪
এমএমআই/আরআইএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।