ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এবার নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার মামলার আবেদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
এবার নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার মামলার আবেদন

ফেনী: সাবেক সংসদ সদস্য ও ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, সাবেক পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও এএসপি (ডিএসবি) মো. আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য ও জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক শাখাওয়াত হোসেন ভূঞা।  

গত সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মো. সাফায়াতের আদালতে আবেদনটি করা হয়।

 

এতে উল্লিখিত তিনজন ছাড়াও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ আবদুল্লাহ, সদর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, নিজাম হাজারীর ক্যাশিয়ার ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক শরীফ উল্যাহ, জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রাশেদুল হক হাজারী, পৌর শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিটু, ফেনী মডেল থানার সাবেক ওসি আবুল কালাম আজাদ, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাবেক ওসি রাশেদ খান চৌধুরী, নিজাম হাজারীর বডিগার্ড এসআই নজরুল ইসলাম, এসআই মাহবুবুর রহমান, ফেনী পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজসহ ২৮ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার আবেদনে শাখাওয়াত উল্লেখ করেন, নিজাম হাজারী অস্ত্র মামলায় সাজা কম খেটে জালিয়াতির মাধ্যমে বের হয়ে ফেনী পৌরসভার মেয়র ও সদর আসনের এমপি হন। এ ঘটনায় তিনি বাদী হয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। এতে নিজাম হাজারী ক্ষুব্ধ হয়ে শাখাওয়াতকে গুম-খুনের পরিকল্পনা করেন। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ ফেনী এলে বাড়ি থেকে তাকে আটক করে শারীরিকভাবে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। বাধা দিতে চাইলে তার বৃদ্ধ মাকেও শারীরিকভাবে আঘাত করেন। এসময় ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ এক লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে তাকে চোখ বেঁধে হত্যার উদ্দেশ্যে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। এলোপাতাড়ি পেটানোর পর তাকে ফেনী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।  

শাখাওয়াত আরও উল্লেখ করেন, থানায় নেওয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম সরকারের নির্দেশে এএসপি আমিনুল ইসলাম তাকে বেদম মারধর করেন। তার দৃশ্য এসআই নজরুল ইসলাম ভিডিও কলে নিজাম হাজারীকে লাইভ দেখান। পরে নিজাম হাজারীর নির্দেশনা অনুযায়ী এএসপি আমিনুল হক, ওসি আজাদ ও রাশেদের নেতৃত্বে শাখাওয়াতকে চোখ বেঁধে ক্রসফায়ারের উদ্দেশ্যে গাড়ি করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। একপর্যায়ে এএসপি আমিনুল ইসলামকে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান তিনি। সেই সময় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা গাড়ি পোড়ানোর মামলাসহ তিনটি মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।  

বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ শহীদ উল্যাহ জানান, বিচারক আবেদন নিয়েছেন। পরে সিদ্ধান্ত দেবেন।

আদালত সূত্র জানায়, আবেদনের শুনানি হবে আগামী ২৭ নভেম্বর।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট ফেনীর মহিপালে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় নিজাম হাজারীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এতে বেশ কজন শিক্ষার্থী প্রাণ হারান। স্বৈরাচারের পতন হলে নিজাম হাজারী ও তার অনুসারীরা পালিয়ে যান। অনেকে গা-ঢাকা দিয়েছেন। সেই হত্যাকাণ্ডে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
এসএইচডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।