যশোর: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশবাসীর কাছে চারটি জিনিস চায় বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, প্রথমত আমরা ভালোবাসার কাঙাল, একটু ভালোবাসা উপহার দিন; ভালোবাসার সঙ্গে সঙ্গে একটু সমর্থন ও সহযোগিতা চাই; এর পাশাপাশি জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনাদের যেন পাশে পাই; আর এই জাতিকে বদলে ফেলার জন্যে আপনাদের অন্তরে যেন জায়গা পাই— এই চারটি জিনিস দেশবাসী যদি আমাদের উপহার দেয়, তাহলে আমরা চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) যশোর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহে জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, এই সংগঠন (জামায়াতে ইসলামী) বাদ দিয়ে একটি দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন আর কাদের নিয়ে দেখবেন? চাঁদাবাজমুক্ত দেশ, দুঃশাসনমুক্ত দেশ হবে— মানুষ আপনাদের দিকে চেয়ে আছে। সে কারণে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে; আরও কোরবানির জন্যে তৈরি হতে হবে।
এদিন সকাল থেকেই দলের নেতাকর্মীরা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ, আশপাশের সড়ক এবং পাশের ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠে অবস্থান নেন। কর্মী সম্মেলন রূপ নেয় জনসভায়। বেলা ১১টার দিকে প্রধান অতিথি মঞ্চে আসেন।
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের বাড়ির বাইরে বের হতে দেবে না, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হয়। দেশে ১৮ কোটি মানুষের ছয় কোটি ঘর আছে অথবা তিন কোটির মতো। ভাবখানা এমন, যেন আমরা তিন কোটি তালা কিনে রেখেছি। ক্ষমতায় গেলে আমরা সব ঘরে একটা করে তালা লাগিয়ে দেব। এটি আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ।
তিনি ওহুদের যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধের সেই কঠিন সময়ে পুরুষেরা তখন নবিজির (সা.) আশেপাশে ছিলেন না। তখন আমাদের গর্বিত মা হজরত মুসাইবা (রা.) রাসুলের (সা.) চারপাশ ঘুরে ঘুরে তাকে নিরাপত্তা দিয়েছেন। তিনি যখন বারণ করেননি, তাহলে নারীদের ঘরবন্দি রাখার আমরা কে? বরং মায়েরা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে। এখন তো তাদের কোনো নিরাপত্তা নেই, মর্যাদাও দেওয়া হয় না। বিভিন্ন জায়গায় লাঞ্ছিত হচ্ছেন। কোরআনি সমাজ কায়েম হলে তারা সম্মান ও মর্যাদা ভোগ করবেন। বলতে পারবেন, আমি এ দেশের একজন গর্বিত মা।
১৬ ডিসেম্বর ‘ভারতের বিজয় দিবস’ মোদির দাবি প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশের পক্ষে যখন একটা কথা ভারত উচ্চারণ করে না, তখন আপনাদের (আওয়ামী লীগ) মুখে কোনো বুলি শুনি না। আমরা প্রতিবাদ করেছি, যারা দেশকে ভালোবাসে তারা প্রতিবাদ করেছেন। যার চেতনা বিক্রি করে দিয়েছে, তাদের মুখে সেদিন কোনো বুলি আমরা শুনিনি। আপনাদের এই চেতনা, এই ভালোবাসা আপনাদের কাছেই রাখুন। গত সাড়ে ৫৩ বছর আমরা দেখেছি। এখন দেশকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময়, সেই সুযোগটা দিন। রাস্তা পরিষ্কার করে দিন।
যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুলের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, মাওলানা আজীজুর রহমান, ঝিনাইদহ জেলা আমির আলী আযম, মাগুরা আমির এমবি বাকের, নড়াইল জেলা আমির আতাউর রহমান বাচ্চু, শহীদ আব্দুল্লাহর বাবা আব্দুল জব্বার প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
ইউজি/আরএইচ