বগুড়া: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে বিএনপি-জামায়াতের টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে তারা আগে থেকেই জানান দিচ্ছেন।
বিএনপি-জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে করছেন দফায় দফায় সাক্ষাৎ। এছাড়া এলাকার পাড়া-মহল্লা, চায়ের স্টলে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরছেন এমপি ভোটের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা।
তারা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারে অধীনে এবারের নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ। দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও শুভেচ্ছা বিনিময় করে চলেছেন তারা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো দিন-তারিখ এখনো ঠিক না হলেও বগুড়ার উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন দেয়ালে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানানো শুরু হয়ে গেছে। কেউ কেউ বিভিন্ন কর্মী সভায় উপস্থিত হয়ে জানান দিচ্ছেন।
এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনীতি পাড়ায় চলছে নানা বিশ্লেষণ। এই বিশ্লেষণে বিএনপির একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে।
জানা যায়, বগুড়া-১ আসনে বিএনপির অনেক নেতা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মুখিয়ে আছেন। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েছে। তাই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হতেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। আওয়ামী লীগ বিহীন এই নির্বাচনে ভোটাররা এখনও মুখ খুলছেন না। উপজেলা পর্যায়ে দল গুছিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অপেক্ষা করছে বিএনপি। বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত বলে দলের নেতাকর্মীরা এখন বেশ চাঙ্গা হয়ে আছে। এবার বিএনপি বগুড়ায় হারানো নিজেদের দুর্গ পুনরুদ্ধার করতে চায়। গত ১৫ বছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। গত ৫ আগস্ট আন্দোলনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। যে কারণে নতুন করে দেশ গঠনে বিএনপি মাঠে নেমেছে। বগুড়ার ৭টি আসনে এবার বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগে থেকেই কাজ শুরু করেছেন। ১৫ বছর পর তারা নির্বাচনে সরকার গঠন করলে পিছিয়ে পড়া বগুড়াকে এগিয়ে নেবেন। এমন প্রত্যাশায় পাড়া-মহল্লায় ছুটছেন প্রার্থীরা। কর্মী সম্মেলন, শুভেচ্ছা বিনিময় আবার কেউ কেউ যাচ্ছেন তাদের পুরানো আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে।
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে বিএনপি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-অর্থ সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক মো. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি ছাত্র জীবন থেকে বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত। তৌহিদুল ইসলাম ১৯৯১ সালে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়ন ছাত্রদলের রাজনীতির মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। তিনি ঢাকাস্থ বগুড়া সমিতির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া এই আসনে বগুড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির, জিয়া শিশু কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, জামায়াতের বগুড়া জেলা শাখার সাবেক আমির অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দীন। অধ্যক্ষ মো. শাহাবুদ্দীন সারিয়াকান্দি-সোনাতলা এলাকায় কর্মীদের নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করে মাঠ গুছিয়ে নিচ্ছেন। এর আগে দীর্ঘ দিন যাবত এই আসনে আওয়ামী লীগ থেকে প্রয়াত আব্দুল মান্নান। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী সাহাদারা মান্নান আওয়ামী লীগ থেকে এমপি নির্বাচিত হন। এই আসনটি দখলে মূল লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের। যে ভোটার টানবেন তিনিই হবেন সংসদ সদস্য।
সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম টিটু বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশে বিগত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে সব আন্দোলনে মাঠে ছিলাম। কঠিন সময়েও সবাইকে সংঘবদ্ধ করে সর্বোচ্চ সংখ্যক ঝটিকা মিছিলে অংশ নিয়েছি এবং হাইকমান্ডের নির্দেশে দলের আন্দোলনের কৌশলগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছি। বর্তমান তরুণ সমাজ মনে করে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে যে পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে সেই প্রেক্ষাপটে বিএনপি শিক্ষিত, স্মার্ট, ক্লিন ইমেজের কর্মীবান্ধব তরুণ প্রার্থীকে বেছে নেবেন। যারা রাষ্ট্র মেরামতে তারেক রহমানের সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যদি এই অঞ্চলের মানুষের সেবা করার সুযোগ দেয় তাহলে আমার স্বপ্ন নদী ভাঙন কবলিত সারিয়াকান্দি-সোনাতলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করা।
বিএনপি’র সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সদস্য আলহাজ কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বগুড়ার রাজনীতি দেখাশোনা করেন। তিনি দলের জন্য যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
এসএএইচ