ঢাকা: ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) যেসব কার্ড বন্ধ রয়েছে সেগুলো কোনো বিলম্ব ছাড়া চালু করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘নতুন করে ভ্যাট আরোপ সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্তের’ প্রতিবাদে নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে মান্না বলেন, বৈষম্যহীন দেশ হওয়ার মতো একটা পদক্ষেপ কি গ্রহণ করেছেন? কোনো একটা জায়গায় বৈষম্য দূর হয়েছে, সেরকম আছে? আমরা রাজনৈতিক দল করি, তারা কিন্তু আপনাকে অযথা উত্যক্ত করি না। আমরা জানি, ৫০ বছর ধরে যে বৈষম্য বাংলাদেশের মাটিতে টিকে আছে, সেটি একদিনে দূর করা যাবে না। কিন্তু, আমরা তো আপনাকে (ড. ইউনূস) জিজ্ঞেস করতেই পারি কোন যুক্তিতে আপনি টিসিবির ট্রাকের পণ্য বন্ধ করে দিয়েছেন। এক কোটি পরিবারকে আপনি যদি কার্ড দিয়ে থাকেন, তাহলে ৪৪ লাখ কার্ড কোন যুক্তিতে আপনি বন্ধ করে দিয়েছেন? আপনি পরিবারের যে কার্ডগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন, এটা করার কোনো দরকার ছিল না। ভ্যাট-ট্যাক্স, টিসিবির কার্ডে দরিদ্র মানুষের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করা, যেটা বন্ধ করেছেন সেটা অবিলম্বে চালু করতে হবে।
তিনি বলেন, একটা পত্রিকা লিখেছে, এবার ভারত শিশু খাদ্যে পর্যন্ত রেহাই দিলো না। শিশুদের খাদ্যে ভ্যাট-ট্যাক্স বসেছে। এগুলো মগের মুল্লুক নাকি! উনি (ড. ইউনূস) অনেক বড় অর্থনীতিবিদ বলে, নোবেল বিজয়ী বলে ইচ্ছে মতো ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়িয়ে দিতে পারবেন! জিনিসপত্রের দাম কমানোর ব্যাপারে এই সরকারের কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। পাঁচ মাসে এ সরকারের কোনো সাফল্য নেই। অর্থনীতিতে যিনি নোবেল পেয়েছেন, তিনি অর্থনৈতিক কোনো গতি দিতে পারেননি। ড. ইউনুসকে খুবই সম্মান করি। কিন্তু যেটা বাস্তব সেটা বলতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে মান্না আরও বলেন, আপনি মেট্রো লেভেলে বড় কাজ করেছেন, তা তো নয়। আপনি ক্ষুদ্র ঋণের ওপর নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন। আপনি শান্তিতে পেয়েছেন। কিন্তু, এখন দ্রব্য-মূল্যের কারণে গরিব মানুষের মধ্যে শান্তি বিরাজ করে না। যে কারণে নোবেল পেয়েছেন, সেটি এখন নস্যাৎ হয়ে গেছে। সেই কাজ এখন মানুষের কোনো কল্যাণে আসছে না। দেশকে আমরা ভালোবাসি। আপনি কেন জিনিসের দাম কমাতে পারেন না, সেটা বলতে হবে। আইনশৃঙ্খলা কেন ঠিক করতে পারছেন না। কেন পাঁচ মাসে কোনো গুণগত পরিবর্তন আমরা দেখতে পাচ্ছি না, সেটা জানতে চাই, জানাতে হবে।
নাগরিক সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, নির্বাচনের জন্য মানুষ রক্ত দিয়েছে। নির্বাচন দরকার। নির্বাচিত সরকার দরকার। অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন থাকতে পারে না। আগামীতে আমরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছি। এ সরকারকে আমরা ক্ষমতায় নিয়ে এসেছি। আমরা চাই এ সরকার সফল হোক।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, জাগপা সহসভাপতি রাশেদ প্রধানসহ আরও অনেক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০২৫
ইএসএস/এমজে