ঢাকা, বুধবার, ২২ মাঘ ১৪৩১, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫ শাবান ১৪৪৬

রাজনীতি

আ.লীগ জনগণকে জিম্মি করে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য গড়েছে: এ্যানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫
আ.লীগ জনগণকে জিম্মি করে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য গড়েছে: এ্যানি

লক্ষ্মীপুর: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, আওয়ামী লীগ আর বিএনপির মধ্যে পার্থক্য আছে। আওয়ামী লীগ লুটপাট করেছে, গুম-খুন করেছে, নোংরামি করেছে।

জীবনে কখনো নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসবে, জনপ্রতিনিধি হয়ে বক্তব্য রাখবে, এটা তারা করার চেষ্টা করে নাই। বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। জনগণকে জিম্মি করেছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জিম্মি করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জিম্মি করে রেখেছে। জিম্মি করে তারা লুটপাটের স্বর্গরাজ্য তৈরি করেছে।  

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের রামরতন বহুমুখী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।  

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ 

এ্যানি বলেন, নেতৃত্বের কাতারে আমাদের একটু স্মরণ রাখতে হবে। আমরা সাধারণ মানুষকে যদি একটু সমীহ করি, সম্মান দিই, তাহলে মানুষ আমাদের সম্মান করবে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সাধারণ মানুষের একটা গভীর সম্পর্ক ছিল। খালেদা জিয়ার যে নেতৃত্ব, আপসহীন, দেশের মানুষের জন্য যে দরদ, তার যে স্বাভাবিক রাজনীতি মানুষের সঙ্গে থেকে। এছাড়া বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কাউকে প্রশ্রয় দেন না৷ এখানেই আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে পার্থক্য।  

তারেক রহমান চাচ্ছেন, বিএনপি চাচ্ছে- সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, এটা আমাদের পক্ষেই সম্ভব, যোগ করেন এ্যানি।  

তিনি বলেন, জুলাইয়ের বিপ্লবে আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাদের অনেক মানুষ শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। এ আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে অনেক সাধারণ মানুষ, ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের, বিভিন্ন পেশার ও অনেক রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অনেকভাবে হয়রানি হয়েছেন, গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। ৫ আগস্টের পর একটা ভিন্ন পরিস্থিতি আমাদের সামনে। এ পরিস্থিতিটা আমার-আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, সেটা যদি আমরা সবাই ধরে রাখতে পারি, যে ত্যাগ স্বীকার করেছি, যে শ্রম-ঘাম, রক্ত দিয়েছি, সব কিছু বৃথা যাবে। সুতরাং এটা বৃথা যাবে, সে কথা আমরা বাংলাদেশের মানুষ মানতে রাজি নই। আমরা লক্ষ্মীপুরে যারা বসবাস করি, আমাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। গ্রামে-গ্রামে হামলা হয়েছে, মামলা হয়েছে। গুম-খুন হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হয়েছি।  

আমরা সারা দেশের মানুষ অত্যাচারিত ছিলাম, নির্যাতিত ছিলাম, সবাই ত্যাগ স্বীকার করেছি। শুধু কোনো রাজনৈতিক দলের একজন ত্যাগ স্বীকার করে নাই। একজন-দুজন জেলে যায়নি। একেকজন একেকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই সবাই মিলে আন্দোলন করেছি, যোগ করেন এ্যানি।  

সম্প্রতি সদর উপজেলার দত্তপাড়ায় সাংবাদিকের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলা ও গুলি ঘটনা প্রসঙ্গে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার সুষ্ঠু বিচার হতে হবে। ফাইন্ড আউট করতে হবে, কারা জড়িত। এ ধরনের ঘটনার নিউজ যদি গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসে, তখন লক্ষ্মীপুরের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়, ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে দেওয়া যাবে না, যোগ করেন তিনি।  

দলের কেউ যদি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে এ্যানি বলেন, দলের বাইরে হোক আর ভেতরে হোক, কেউ যদি সমাজকে কলুষিত করার চেষ্টা করে, সেটা সালিশের মাধ্যমে করুক, অন্যায়ভাবে করুক, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে করুক বা গুলি করুক, চাঁদাবাজি করুক, তাদের ক্ষমা লক্ষ্মীপুরের মাটিতে হবে না। দলের নেতা, পদবি দেখে কিন্তু এ বিচার হবে না। সবাই সমান। মানুষকে সম্মান দিলে নেতৃত্ব আসে। জোর করে সম্মান নেওয়া যাবে না। যেটা আওয়ামী লীগের কাজ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, হেলমেট বাহিনীর কাজ, সেটা বিএনপির কাজ নয়। বিএনপির কাজ হলো মানুষের সেবা করা। বিএনপি গণমানুষের দল। আওয়ামী রক্ষী বাহিনী সৃষ্টি করেছে, তারা দুঃশাসন করেছে, তারা হেলমেট বাহিনী করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। আজ আমরা সবাই মিলে যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি, এটা ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার। আমরা সবাই মিলে এ প্রজম্মের জন্য, এ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ সুন্দর করতে চাই। এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।  

ইটভাটা মালিকদের উদ্দেশে এ্যানি বলেন, মাটি কাটব, জোর করে টাকা দিয়ে এসে ক্ষেতের মাটিটা কাটব, এক কোপের কথা বলে ১০ কোপ কাটব, এটা হবে না। ইটভাটার জন্য জমি কিনে মাটি নেন। জমি কিনে ইট বানান। মাটি কেটে পুকুর বানাবেন, সেখানে মাছের চাষ করেন। এক বিনিয়োগে দুটি লাভ হবে। এক কোপের কথা বলে পাঁচ কোপ নেবেন, মাটি কাটা কিন্তু বন্ধ করে দেওয়া হবে। মাটির ব্যবসা করে চাঁদাবাজি করা যাবে না। কেউ বিল্ডিং বানাবে, ওনাকে শ্রমিক, ইট, বালু সিমেন্ট দিতে হবে, এটি আওয়ামী লীগের কাজ। এ বিষয়গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে। এটি যে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও নেতা মনে রাখবে না তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

দত্তপাড়া রাম রতন বহুমুখী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এম বেল্লাল হোসেনের সভাপতিতে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন প্রধান শিক্ষক মো. হানিফ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২৫
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।