সিরাজগঞ্জ: বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, কোনো অফিসে আওয়ামী লীগের চাকরি হলে সেটা প্রতিহত করতে হবে। আওয়ামী লীগের কারো চাকরি করার অধিকার নেই।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নবায়ন ফরম এর শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর বাংলাদেশে এক নতুন রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত শুরু হয়েছে। যেই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি হচ্ছে সবচেয়ে জনগণের নন্দিত দল। যে দল সৃষ্টি করেছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, যে দলকে যাকে আজ পর্যন্ত কেউ কালিমা লিপ্ত করতে পারেনি আওয়ামী লীগ ছাড়া। যে দলের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে জনগণের পাশ থেকে সরে যায়নি, কারাবরণ করেছেন হাসিনার বশ্যতা স্বীকার করেননি। যে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যিনি সুদূর লন্ডনে থেকেও বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন, কতখানি দূরদর্শিতা ও মনের জোর থাকলে এ কাজটি করতে পারেন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ৫ তারিখের পরে আমার বিএনপির নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙোগ আত্মীয়তা বেড়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আমাদের নেতাকর্মীদের অত্যাচার করেছে, তাই শয়তানের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ হতে পারে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নয়।
সাবেক এ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, আমি বলে আসছি বিএনপি ক্ষমতায় আসেনি, তবে বিএনপি ক্ষমতায় আসার দল। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় যাওয়া দলের মানুষের যে গ্রহণযোগ্যতা প্রয়োজন সেরকম ব্যবহার জনগণের সঙ্গে করতে হবে। জনগণ কিছু চায় না, চায় শান্তি, চায় ভালো করে কথা বলা। কিন্তু আপনারা যদি মনে করেন আমরা বড়দল প্রভূ হয়ে গেছি, তাহলে জনগণ আপনার কাছে আসবে না আপনাকে ভালোবাসবে না। জনগণকে দিয়ে তোমরা, জনগণকে দিয়ে আমি। জনগণ পাশে থাকলে আপনারা স্বার্থকতা পাবেন। যারা বিএনপির সদস্য হবেন, তারা হবেন বিএনপির খাঁটি সোনার কর্মী। যারা দীর্ঘ ১৬ বছর যুদ্ধ করেছে। ৫ মিনিটের জন্য যদি কেউ আওয়ামী লীগ হয়ে থাকে, তাদের জন্য বিএনপি হারাম হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, আমাকে অনেকেই ফোন দিয়ে বলে, ভাই থানা আওয়ামী লীগকে ধরে না। আমি বলি থানা ধরে না তুমি কি করো? ১৬ বছরের শিক্ষা আমরাও কিছুটা পাইছি, ১৬ বছরের অপমান নির্যাতন, লাঞ্ছনা সব ভুলে গেছো। মুসলমান কিন্তু শিখায় না, একগালে চড় খেয়ে অপর গাল পেতে দিতে হবে। মুসলমান যদি হও এক গালে চড় খেলে দুই গালে চড় দিতে হবে।
হাসিনা তার হুকুমে ১৬ বছরে আমাদের যত নির্যাতন করছে, আমাদের পরিবার ছাড়া করেছে, গ্রামছাড়া করেছে। কিন্তু আল্লাহর বিচার দেখেন, কত কঠোর। মাত্র ৪৫ মিনিট টাইম দিয়েছে, পরনের শাড়িটাও ঠিকমতো পরতে পারেনি। আল্লাহ প্রতিশোধ নিয়েছে, আমাদেরও প্রতিশোধ নিতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে, ভুলে গেলে চলবে না, অমুক আমার মামাতো ভাই, চাচাতো ভাই। কোনো ক্ষমা নেই।
কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. বদিউজ্জামান ফেরদৌসের সভাপতিত্বে এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাতে রাব্বী উথানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাইদুর রহমান বাচ্চু, স্বেচ্ছাসেবক দল সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল কায়েস, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২৫
জেএইচ