ঢাকা, সোমবার, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ১১ আগস্ট ২০২৫, ১৬ সফর ১৪৪৭

রাজনীতি

চাঁদাবাজ-মাদকবিক্রেতাদের ছাড় দেওয়া হবে না: রবিন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১:৫৯, আগস্ট ৯, ২০২৫
চাঁদাবাজ-মাদকবিক্রেতাদের ছাড় দেওয়া হবে না: রবিন বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন

চাঁদাবাজ ও মাদকবিক্রেতাদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না—এমনকি মাস্তানিও বরদাশত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

তিনি বলেছেন, বিএনপি একটি গৌরব, সংগ্রাম ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল।

এই দলের পরিচয়ে কেউ যদি চাঁদাবাজি বা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকে, প্রমাণ মিললে তাকে সরাসরি শাস্তির আওতায় এনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হবে।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর কদমতলী থানার ৫২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তানভীর আহমেদ রবিন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত ১৮ বছর ধরে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার শাসনের কারণে সমাজে যে অবক্ষয় সৃষ্টি হয়েছে, তার খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে। আগে সমাজে শাসন ব্যবস্থা ছিল। এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, মুরুব্বি, আলেম ও মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে সমাজ পরিচালিত হতো এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নে ভূমিকা রাখতেন। সেই ব্যবস্থাকে নষ্ট করেছে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী। মাদকের মাধ্যমে ধ্বংস করেছে যুবসমাজকে। মাদকের কারণে অনেক পরিবার হয়েছে নিঃস্ব।

বিগত সরকারের সময় কাউন্সিলরদের ভূমিকা নিয়ে তানভীর আহমেদ রবিন অভিযোগ করে বলেন, যারা বিনা ভোটে কাউন্সিলর হয়েছিলেন, তারা এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলের বাড়িওয়ালার বাস করেন তা দেখে উন্নয়ন কাজ করতেন। বিএনপি সমর্থক বাড়িওয়ালাদের এলাকায় রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎসহ কোনো কাজ হতো না। সবচেয়ে অবহেলিত ৫২ নম্বর ওয়ার্ড, যেখানে বছরের পর বছর রাস্তাঘাট ভাঙা, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় এবং প্রতি বছর ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হন মা-বোন, সন্তান ও মুরুব্বিরা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাতের ভোটে নির্বাচিত কাউন্সিলররা কোনো কাজ না করেই ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) থেকে বিল উত্তোলন করে নিয়েছে। কারণ সেই সময় দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান ছিল ডিসিসি।

দীর্ঘ ১৮ বছরে সরকারি ও আধা-সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্নীতিতে জর্জরিত হয়েছে উল্লেখ করে তানভীর আহমেদ রবিন বলেন, লুটপাটের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ৫২ ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি খেলার মাঠ, একটি মেডিকেল কলেজ বা সরকারি হাসপাতাল পর্যন্ত গড়ে তোলা হয়নি। অথচ এলাকায় অনেক সরকারি খালি জায়গা ছিল, যা তারা দখল করে বিক্রি করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, এলাকার মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা থেকে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাব। তবে এখন একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে, না আছে মেয়র, না আছে কাউন্সিলর। নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। অনেক এলাকায় গ্যাস থাকে না, কিন্তু অফিসে গিয়ে কথা বলাও যায় না।

রবিন বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। মানুষ একটি নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে—যে দেশের জন্য ছোট ছোট শিশুদের জীবন দিতে হয়েছে, সেই বাংলাদেশকে আমরা সবাই মিলে গড়ব।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন আরও বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা একা সব সমস্যার সমাধান করতে পারে না। এজন্য এলাকার বাড়িওয়ালা, মুরুব্বি, শিক্ষক, আলেম-ওলামাদের সমাজের কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। তারা আমাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারেন।

৫২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রবিউল ইসলাম দিপুর সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- ওয়ার্ড উপদেষ্টা আজহারুল ইসলাম সরকার, গোলাম কিবরিয়া, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম আনিসসহ অনেকে।

এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।