ঢাকা: ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাবেলা ও জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে গুলশানের নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এই মুহূর্তে রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই তিনিই যখন বলছেন, এ হত্যাকাণ্ড বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ইঙ্গিতে হয়েছে, তখন সরকারের কোনো সংস্থার পক্ষেই সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব না। তাই সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে দিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য সমীচীন হয়নি মন্তব্য করে প্রবীণ এ রাজনীতিক বলেন, ঘটনা যখন ঘটেছে, তখন বিএনপির চেয়ারপারসন দেশের বাইরে ছিলেন। এখনও তিনি দেশের বাইরেই রয়েছেন। তাহলে কি লন্ডনে বসে রিমোর্ট কন্ট্রোল টিপে বিদেশি হত্যা করেছেন তিনি?
শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসলেও শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে আমরা কেউ চ্যালেঞ্জ করছি না। সে সুযোগও নেই। তবে তার কাছ থেকে আমরা দায়িত্বশীল বক্তব্য আশা করি। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমাদের কাছে আজগুবি বক্তব্য বলে মনে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, সম্প্রতি একটি জরিপে বলা হয়েছে, বিশ্বের ১৪০টি বসবাস অযোগ্য শহরের মধ্যে ঢাকা শহর ২ নম্বরে। তাহলে কোন বিবেচনায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী পরিবেশবাদী নেতা হিসেবে ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পেলেন। তারপরও তিনি আমাদের প্রধানমন্ত্রী, তাই তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি এ পুরস্কার অর্জনের জন্য।
শিশুর গায়ে গুলি ছোড়া গাইবান্ধার এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে নিয়ে খেলা শুরু হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গাইবন্ধার এই এমপি এ ধরনের ঘটনা আগেও ঘটিয়েছেন। তার আচরণের মধ্যে বর্তমান ছাত্রলীগ ও সরকারের বিভিন্ন ক্যাডার বাহিনীর প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে।
দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নে ভিত্তিতে স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এ ধরনের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি-না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দলের চেয়ারপারসন। তবে ব্যক্তিগতভাবে সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমি পছ্ন্দ করছি না।
জঙ্গিবাদ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বিএনপি শান্তিবাদী একটি দল। এ দলের সঙ্গে জঙ্গিবাদের বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই। বিএনপির মধ্যে যদি বিন্দুমাত্র জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব দেখতাম, তাহলে এ দলের সঙ্গে আমি এক মুহূর্তের জন্যও থাকতাম না।
বিএনপি কেন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাসার সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনকে অবরুদ্ধ করে রাখলে, প্রধান কার্যালয়ের তালা ভেঙে নেতাকর্মীকে পেটানো হলে, সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিং করতে না দিলে কীভাবে দলটি ঘুরে দাঁড়াবে। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এমন ঘটনা তো আগে কখনও ঘটেনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৫
এজেড/এটি/এএসআর