ঢাকা: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে এরইমধ্যে নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন ইসির উপ-সচিব সামসুল আলম।
একইসঙ্গে সংখ্যালঘু ও নারী ভোটাররা যাতে নিশ্চিন্তে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেফতার
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে-ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষের বাইরে গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ) এলাকায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাসহ সব বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার অভিযান পরিচালনা জোরদার করতে হবে। একইসঙ্গে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রণয়ন করে চাঁদাবাজ, মাস্তান ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সংখ্যালঘু ও নারী ভোটারদের আশ্বস্তকরা
সব স্তরের ভোটারদের বিশেষ করে নারী ভোটারদের নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। এ উদ্দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে গৃহীত কার্যকলাপ সম্পর্কে সব শ্রেণির ভোটার, বিশেষ করে সংখ্যালঘু ও নারী ভোটার যেন পূর্ব থেকে নিশ্চিত হতে পারেন, তা উপযুক্ত প্রচারের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে।
এ নির্বাচনে প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। যেখানে প্রায় ৭২ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
পেশিশক্তির প্রভাব মুক্তকরণ
এদিকে পেশিশক্তির প্রভাব মুক্ত নির্বাচন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। বলা হয়েছে-প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাদের সমর্থক যাতে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা মেনে চলেন এবং কোনো তিক্ত, উস্কানিমূলক ও ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে এমন কার্যকলাপ বা বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন সে ব্যবস্থা নিতে হবে।
একইসঙ্গে অর্থ, পেশি-শক্তি অথবা স্থানীয় ক্ষমতা দ্বারা কেউ যেন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে না পারেন এবং প্রার্থীদের মধ্যে যেন পারস্পরিক সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকে; সে নিশ্চয়তা বিধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহলের সহযোগীতা কামনা করতে হবে। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও বলেছে ইসি।
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেই সব ক্ষমতা ন্যস্ত থাকে। তিনি যে কোনো পরিস্থিতিতে যে কোনো কর্তৃপক্ষের সহায়তা চাইতে পারেন।
এদিকে বিষয়গুলো বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে একটি পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। যে পরিকল্পনা প্রণয়নের পর তা ইসিকে জানাতেও বলা হয়েছে।
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে সহায়তার জন্য ওই নির্দেশনার অনুলিপি বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি এবং র্যাবের মহাপরিচালক, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ সরকারের সব দফতর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় রিটার্নিং কর্মকর্তাকে ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিম গঠন করতে বলা হয়েছে। যে টিম তিনদিন পরপর নির্বাচনী এলাকার পরিস্থিতির ওপর প্রতিবেদন তৈরি করে ইসিকে জানাবে।
এছাড়া থাকছে নির্বাচন মনিটরিং টিম, যা প্রতি সাতদিন পরপর ক্ষেত্র বিশেষে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচনের আইন ও বিধিমালা প্রতিপালনের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে ইসিকে অবহিত করবে।
অন্যদিকে পুলিশসহ অন্যান্য সহযোগী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেলও মাঠে থাকছে। এ সেল আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়ে ইসিকে জানাবে।
৩০ ডিসেম্বর ২৩৬ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ করবে ইসি। এক্ষেত্রে দেশে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে দলীয়ভাবে ভোটগ্রহণ করা হবে। কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আগের মতই নির্দলীয়ভাবে ভোটগ্রহণ করবে ইসি।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৫
ইইউডি/এসএইচ