ঢাকা, রবিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০১৬
দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

ঢাকা: সদ্য অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছে, তাদের ব্যাপারে দল কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের দল থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে দলটি।



এর মধ্যে দলীয় মেয়র প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করে বিদ্রোহী প্রাথী হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের যারা সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়েছেন তারা রয়েছেন।

দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শেষ পর্যন্ত ৫০ জনের মতো নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এর মধ্যে ১৯ জন নির্বাচিত হয়েছেন। তবে নির্বাচিত হলেও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করায় তাদেরও সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।

এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ভেতরে ভেতরে সমর্থন ও সহযোগিতা করার অভিযোগ রয়েছে দলের ২২ জন সংসদ সদস্যের (এমপি) বিরুদ্ধে। তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানা গেছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা না হলেও আগামী নির্বাচনে তাদের আর দলের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। খোদ দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, নির্বাচনের পর দিন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে নির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের যেসব এমপি সমর্থন দিয়েছেন, তাদের বিষয়েও আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করে সব কর্মকাণ্ডের তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেন।

পৌর নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন আগেই তাদের দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন পর্যন্ত সময় দেওয়ার পরও যারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেনি তাদের বহিষ্কার করা হয়।

আগামী ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই সভায় পৌরসভা নির্বাচনের মূল্যায়ন এবং দলের সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারনী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।

গত ৩০ ডিসেম্বর সারাদেশে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন- মানিকগঞ্জ সদরে গাজী কামরুল হুদা সেলিম, বগুড়ার ধুনটে এজিএম বাদশাহ, দিনাজপুরের বিরামপুরে লিয়াকত আলী সরকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে আজরী মোহাম্মদ কারিবুল হক, মেহেরপুরের গাংনীতে আশরাফুল ইসলাম, পাবনার চাটমোহরে মির্জা রেজাউল করিম দুলাল, চুয়াডাঙ্গায় ওবায়দুর রহমান চৌধুরী, জীবননগরে জাহাঙ্গীর আলম, সিলেটের কানাইঘাটে নিজাম উদ্দিন, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় শফি আলম ইউনুছ, বরগুনা সদরে শাহাদাত হোসেন, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সাদেকুর রহমান, ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে আবদুস ছাত্তার, ত্রিশালে এবিএম আনিছুজ্জামান, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে আবদুল কাইয়ুম, নেত্রকোনার মদনে আবদুল হান্নান শামীম, গোলাপগঞ্জে সিরাজুল জব্বার চৌধুরী, ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে মোজাফফর হোসেন বাবলু মিয়া ও নড়াইলের কালিয়ায় ফকির মুশফিকুর রহমান।

দলের যেসব সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম-৪ আসনের দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-৬ আসনের এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের অধ্যাপক ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী, চাঁদপুর-৪ আসনের ড. শামসুল হক ভূঁইয়া, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের রমেশ চন্দ্র সেন, বগুড়া-৫ আসনের হাবিবুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের হাসিবুর রহমান স্বপন, পাবনা-৩ আসনের মকবুল হোসেন, যশোর-৩ আসনের কাজী নাবিল আহমেদ, নড়াইল-১ আসনের কবিরুল হক মুক্তি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের গোলাম রাব্বানী, দিনাজপুর-১ আসনের মনোরঞ্জন শীল গোপাল, দিনাজপুর-৬ আসনের শিবলী সাদিক, গাইবান্ধা-৪ আসনের আবুল কালাম আজাদ, বরগুনা-১ আসনের অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, মৌলভীবাজার-২ আসনের আবদুল মতিন, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের মুহিবুর রহমান মানিক, মানিকগঞ্জ-১ আসনের এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের আলী আজগার টগর ও কুষ্টিয়া-৪ আসনের আবদুর রউফ।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, যারা দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই আছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৬
এসকে/এটি/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।