ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে স্থগিত হওয়া তিনটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি)।
হামলা, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও অবৈধভাবে সিল মারার অভিযোগে নির্বাচন কমিশন এ কেন্দ্র তিনটির ফলাফল স্থগিত করে।
ভোটকেন্দ্রে হামলা, ব্যালট বাক্স ভাঙচুর, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও অবৈধভাবে সিল মারার অভিযোগে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরকারি মহিলা কলেজ (পুরুষ) কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল স্থগিত করা হয়।
এ তিনটি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৩৭৫। পুনরায় ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণার পর নির্বাচনী প্রচারণায় নেমেছেন ৪ হাজার ৬৭৮ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বিএনপির প্রার্থী মির্জা ফয়সল আমীন ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী তহমিনা আখতার মোল্লা। তবে দৃশ্যমান ভোটের মাঠে বিএনপির প্রার্থীকেই দেখা গেছে।
৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় স্থগিত হওয়া তিন কেন্দ্রের ভোটারা আতঙ্কিত। ভোটারা বলছেন, সুষ্ঠু পরিবেশ সৃস্টি হলেই তারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন। অন্যথায় বিরত থাকবেন ভোট দেওয়া থেকে।
১০ নং ওয়ার্ডের ভোটার আহসান হাবিব বলেন, ভোটের দিন শুধু গন্ডগোল হয়। ঠিক মতো ভোট দেওয়া যায়না। এবারের পুনঃভোট নিয়ে আমরা আতঙ্কিত, এছাড়া বিএনপির প্রার্থীও শঙ্কিত।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির ফয়সল আমীন বলেন, ধানের শীষের জয় ছিনিয়ে নিতে সরকারদলীয় প্রার্থীর লোকজন এ আশঙ্কার কথা ছড়াচ্ছেন। তবে আমরা ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে উৎসাহিত করছি। ফলাফল পাল্টে দেওয়া না হলে আমিই জয়ী হব।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের তহমিনা আখতার বলেন, ভোটের ব্যবধান যাই হোক, তিনটি কেন্দ্রের ভোটেই জয়ী হওয়াটা কঠিন কিছু না। যেভাবে জনগণের সমর্থন পাচ্ছি, তাতে আমি আশাবাদী।
সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে বলে জানান জেলা নির্বাচন অফিসার শুকুর মাহামুদ মিঞা।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলে রাব্বী বলেন, ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। আইনশৃংখলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে থাকবে।
ঠাকুরগাঁও পৌরসভার নির্বাচনে ২১টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৮টি কেন্দ্রে বিএনপির প্রার্থী মির্জা ফয়সল আমীন ভোট পেয়েছেন ১৬ হাজার ৩২৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী তহমিনা আখতার মোল্লা পেয়েছেন ১১ হাজার ৬৫১ ভোট। আর আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম সোলায়মান আলী সরকার ৪ হাজার ১১৯ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন। মেয়র ছাড়াও এ তিন কেন্দ্রে সাধারণ কাউন্সিলর দুই ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর দুই জন নির্বাচিত হবেন।
৩০ ডিসেম্বর এক কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকরা ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে হামলা চালিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করে নেন। তারা কেন্দ্রের ব্যালট পেপারও ছিনিয়ে নিয়ে যান। হামলাকারীরা বেসরকারি টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। একই ওয়ার্ডের গোবিন্দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে একদল যুবক হামলা চালিয়ে ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করেন ও ৬০০ ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সরকারি মহিলা কলেজ পুরুষ ভোট কেন্দ্রে ভোটের হারের সঙ্গে অবশিষ্ট ব্যালটের পরিমাণের গরমিল পাওয়া যায়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
আরএ/