সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে: মেট্রো স্টেশন স্থাপন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতে সুবিধা হয় সেজন্য মেট্রো স্টেশন করা হচ্ছে। কিন্তু ‘যার জন্য করি চুরি, সেই বলে চুরি’ মেট্রো রেল হলে তো তাদেরই উপকার হবে।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, যাতে যানজটমুক্ত চলাচল করা যায়, সেজন্য উড়াল সেতু নির্মাণ করা হযেছে, মেট্রো রেল নির্মাণেরও পদক্ষেপ নিয়েছি।
‘উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মেট্রো রেলে আসতে সময় লাগবে মাত্র আধ ঘণ্টা, স্টেশন থাকবে ১৬টি। ঢাকা ইউনিভার্সিটির শিক্ষ-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কথা চিন্তা করে সেখানেও একটি স্টেশন রাখা হয়েছে। ‘
শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রো রেল নিয়ে কিছু শিক্ষক-ছাত্র আন্দোলনে নেমে পড়েছেন। কিন্তু মেট্রো রেল হলে তো উত্তরা-বিমানবন্দর থেকে ১০- থেকে ১৬ মিনিটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসতে পারবে।
মেট্রো রেল প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেও রেল লাইন ছিল। ট্রেনে বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষক-ছাত্ররা আসা-যাওয়া করতেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও রেল লাইন আছে। এখানে সমস্যা কী?’
তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিতে মেট্রো রেল করা হচ্ছে, সেখানে সাউন্ডপ্রুপ করা দরকার হলে তাও করা হবে। তবে এর আগেই কিছু শিক্ষক-ছাত্র আন্দোলন নেমে গেছেন। কিছু মানুষই আছেন যারা সব কিছুতে শুধু আন্দোলন খুঁজেন। ’
যানজট নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমাবেশে আসার পথে আমিও যানজটে পড়েছিলাম। আশা করি ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন হলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সহজ হবে। ’
২০২২ সালে দারিদ্র্য কমবে ১৪ শতাংশে
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়ন করছে। দেশের বিভিন্ন ইউনিয়ন কার্যালয়ে ডিজিটাল সেন্টার করা হয়েছে। এতে কর্মসংস্থান যেমন বেড়েছে তেমনি নতুন করে সুযোগও সৃষ্টি করে দেওয়া হচ্ছে। কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
‘বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার ২২ শতাংশ, আমাদের লক্ষ্য ২০২২ সালের মধ্যে এ হার ১৪শতাংশে নামিয়ে আনা। এছাড়া গরিব দুঃস্থদের ভাতা দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করছে সরকার। ’
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও। বিএনপির দুঃশাসন, জ্বালাও-পোড়াওয়ের পরও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
‘নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংক মিথ্যা অভিযোগ তুললেও তা প্রমাণ করতে পারেনি। আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করছি। ’
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে পরপর নির্বাচিত করেছে। আমরা সেই ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন করে যাচ্ছি। নিম্ন মধ্যম নয়, মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত হবে করবে। আজকে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি উন্নতি হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সবার বেতন ভাতা বাড়ানো হয়েছে।
‘জ্বালাও-পোড়াও করে কেউ বাধা দিতে পারবে না। জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ আমরা গড়বোই,’ যোগ করেন তিনি।
সরকারের নেওয়া নানা উন্নয়ন কর্মসূচির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যানজট নিরসনে ফ্লাইওভার, ফুটওভার ব্রিজসহ নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যানজটমুক্ত ঢাকা গড়তে নির্বাচিত মেয়ররাও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
এসকে/এমইউএম/আইএ/এমএ
** খালেদাকে প্রধানমন্ত্রী: ‘ওনার কত বড় দুঃসাহস’
** যানজট মোকাবেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছি
** বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরলেই স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়
** ‘খালেদা লাইন বদলাইছেন’
** ১০ জানুয়ারি বাঙালির ঐতিহাসিক দিন
** হাসিনাকে আরও কয়েক টার্ম প্রধানমন্ত্রী হওয়া দরকার
** আওয়ামী লীগের জনসভা শুরু, সভামঞ্চে প্রধানমন্ত্রী
** সাভার ছেড়েছে সহস্রাধিক বাস-মিনিবাস