নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপের অংশ হিসেবে বুধবার (১১ জানুয়ারি) আওয়ামী লীগের ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে যায়।
দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ইসি পুনর্গঠনে ৪ দফা প্রস্তাব দেন।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শেষে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের প্রস্তাবগুলো পড়ে শোনান এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া ৪ দফা প্রস্তাবে বলা হয়, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবেন। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি যেরূপ উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, সেই প্রক্রিয়ায় তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের নিয়োগ করবেন। এ লক্ষ্যে সম্ভব হলে এখনই একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন অথবা অধ্যাদেশ জারি করা যেতে পারে। সময় স্বল্পতার কারণে আগামী ইসি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তা সম্ভব না হলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের সময় যেন এর বাস্তবায়ন সম্ভব হয়, সংবিধানের নির্দেশনার আলোকে এখন থেকেই সে উদ্যোগ গ্রহণ করা।
সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বর্তমানে বিরাজমান সকল বিধিবিধানের সঙ্গে জনমানুষের ভোটাধিকার অধিকতর সুনিশ্চিত করার স্বার্থে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং এর প্রবর্তন করা।
এছাড়া সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কিছু বিষয় অতীব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতির কাছে ১১ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে আওয়ামী লীগ।
এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয়গুলো হলো, একটি স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন নির্বাহী বিভাগের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/সংস্থার দায়িত্বশীলতা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও এর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দায়িত্বশীল ও নিরপেক্ষ আচরণ, ছবিযুক্ত একটি নির্ভুল ভোটার তালিকা এবং গ্রহণের দিন নির্বাচন কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা।
নির্বাচন পরিচালনায় বেসরকারি সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের পরিবর্তনে কেবলমাত্র প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের প্রিজাইডিং অফিসার থেকে পোলিং অফিসার পদে নিয়োগ করা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যদের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল আচরণ। নির্বাচনে পেশীশক্তি ও অর্থের প্রয়োগ বন্ধ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সকল পর্যায়ের ভোটারদের অবাধ ভোটদানের সুযোগ নিশ্চিত করা।
নির্বাচন কালীন সময়ে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় সকল সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত করা।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, সার্চ কমিটি গঠন রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি আলোচনা করবেন কিনা সেটাও রাষ্ট্রপতির এখতিয়ার। রাষ্ট্রপতির যেকোনো উদ্যোগের প্রতি আওয়ামী লীগের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। রাষ্ট্রপতি যেটাই করবেন, কোনো কোনো পদক্ষেপ যদি আমাদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধেও যায় সেটাও আমরা মেনে নেবো। রাষ্ট্রপতির প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
এ সময় ই-ভোটিং নিয়ে অপর এক প্রশ্নে উত্তরে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এইচ টি ইমাম বলেন, রাষ্ট্রপতি যেভাবে নির্দেশ দেবেন ইসি সেইভাবে কাজ করবে। ই-ভোটিংয়ের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলে আমরা মনে করি।
*রাষ্ট্রপতি যে প্রস্তাব দেবেন মেনে নেবো
বাংলাদেশ সসয়: ২১৪৯ ঘন্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৭
এসকে/আরআই