এর আগে মামলার আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে সাফাই সাক্ষী দেবেন বলে আদালতকে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান আদালতকে জানান, খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনো সাফাই সাক্ষী দেওয়া হবে না।
আসামি মনিরুল ইসলাম খালেদা জিয়াকেসহ নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে ২৭১ জন সাফাই সাক্ষীর নামের তালিকা আদালতে দাখিল করেছেন। ওই সাক্ষীদের সাক্ষ্যেই খালেদা জিয়ার নির্দোষিতার বিষয়টি এসে যাবে বলেও জানান তিনি।
অপ্রয়োজনীয় সাক্ষীর নাম দিয়ে সাক্ষী তালিকা লম্বা করায় এ তালিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত। তা সংশোধন করে নতুন তালিকা আদালতে দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষ।
এদিকে চ্যারিটেবল মামলায় ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন ফের পিছিয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে খালেদা জিয়ার আবেদনে পঞ্চমবারের মতো অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে নতুন এ দিন ধার্য করেন আদালত।
এর আগে খালেদার উপস্থিতিতে দুদক থেকে অবসরপ্রাপ্ত নূর আহমেদ ৩২তম ও শেষ সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন অরফানেজ মামলায়। পরে খালেদা জিয়ার পক্ষে তাকে জেরা শুরু করেছেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান।
রাজধানীর বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দারের অস্থায়ী আদালত এসব আদেশ দেন। আদালতটিতে চলছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম।
চ্যারিটেবল মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে গত বছরের ০১ ডিসেম্বর লিখিত বক্তব্য পড়তে শুরু করেন খালেদা। বৃহস্পতিবার অসমাপ্ত বক্তব্য পাঠের দিন ধার্য ছিল। তবে তার আইনজীবীরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে করা আবেদন শুনানির অপেক্ষায় থাকার কথা উল্লেখ করে সময়ের আবেদন জানান। দুই সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী ২৬ জানুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করেন আদালত। এর আগেও আরও চারবার আবেদন জানিয়ে দিন পিছিয়ে নিয়েছেন খালেদা।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান।
দু’টি মামলায় হাজিরা দিতে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে বেলা ১১টায় আদালতে পৌঁছেন খালেদা জিয়া।
চ্যারিটেবল মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
** চ্যারিটেবলে খালেদার আত্মপক্ষ সমর্থন পিছিয়ে ২৬ জানুয়ারি
** আদালতে খালেদা, অরফানেজে নতুন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে
** আদালতের পথে খালেদা
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৭
এমআই/এএসআর