রোববার (০২ এপ্রিল) বিকেলে নগর ভবন ছাড়ার পর পরই মন্ত্রণালয়ের আদেশের কপিটি তার বাড়িতে পৌঁছে দেন রাসিক কর্মকর্তারা। ফলে বর্তমানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ ‘শূন্য’ হয়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে সকালে রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের আদেশে বর্তমান মেয়রকে সাময়িক বরখাস্তের কথা বলা হয়েছে। তবে তার স্থলে কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়নি।

এজন্য তারাও বিষয়টি বুঝতে পারছেন না। এজন্য তারা মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী আদেশের অপেক্ষা করবেন। আদেশ না পেলে প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করবেন। তবে দ্রুতই নির্দেশনা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাসিকের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এদিকে, মন্ত্রণালয়ের আদেশের পর নগর ভবনে আর যাবেন না বলে জানিয়েছেন রাসিকের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তবে ওই আদেশের বিরুদ্ধে আবারও আইনি লড়াইয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।     

এর আগে ২৩ মাস পর চেয়ারে বসার ১০ মিনিটের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের আদেশে সাময়িক বরখাস্ত হন রাসিক মেয়র বুলবুল। তবে চেয়ারে বসে মেয়র বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে আমিই বৈধ মেয়র। তাই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ পাঠানো হলেও আমি আগামীকাল (আজ সোমবার) অফিস করবো এবং দায়িত্ব পালন করবো’।

তবে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত থেকে সোমবার সড়ে আসলেন বুলবুল।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত ওই আদেশে বলা হয়েছে, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের বিরুদ্ধে মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১, রাজশাহীর মামলা নং- ১৩৬/১৫ (বোয়ালিয়া থানার মামলা নং-১৭, ৮ ফেব্রুয়ারি-২০১৫) অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছে।

স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন-২০০৯ (২০০৯ সালের ৬০নং আইন) এর ১২ এর উপধারা (১)-এ সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালতের গৃহীত হওয়ায় লিখিত আদেশের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জানায়।

প্রথম দফায় ২০১৫ সালের ৭ মে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে মন্ত্রণালয়।

পরে ২০১৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত তার বরখাস্ত আদেশ এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রকে অবৈধ ঘোষণা করেন। পরে ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রও তার পদ হারান। তাই নতুন কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত রাজশাহী নগর ভবন থাকবে মেয়রবিহীন।  

বাংলাদেশ সময়: ১২২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
এসএস/বিএস