বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে সন্ত্রাসবিরোধী দিবস ও রাশেদ খান মেনন হত্যা চেষ্টার ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত 'বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বহুমুখিতাঃ গণতন্ত্র-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আজকের এই দিনে আমাকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করা হয়েছিল।
বাংলাদেশের সন্ত্রাসী হামলা একক হত্যাকান্ডের দিকে ধাবিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আগে সংঘবদ্ধভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালিত হত, কিন্তু এখন এককভাবে তা পরিচালিত হয়ে আত্মঘাতী হামলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা আগের চেয়ে বেশি ভয়ংকর। আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে না পারলে এই জঙ্গিবাদকে নির্মূল করা সম্ভব না।
ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশিদ, ইতিহাসবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মুনতাসির মামুন, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক শাহরিয়ার কবিরসহ দলটির অন্য নেতারা। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক দলীয় কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ আস্তে আস্তে সাম্প্রদায়িক দেশে পরিণত হচ্ছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে পরিচয় ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। দেশে অরাজকতা ও সন্ত্রাসবাদ বৃদ্ধিতে সরকার এক দিক দিয়ে সহযোগিতা করছে। সরকার বিএনপিকে দেশে রাজনীতি করতে দিচ্ছে আবার জামাতকেও নিষিদ্ধ করছে না। কেননা এরাই জঙ্গিবাদের জন্মদাতা ও লালন পালন করে।
স্বাধীনতাবিরোধী এ ধরনের রাজনীতিবিদদের দেশে ঠাঁই দেওয়া উচিৎ না বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী। এসময় মন্ত্রী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, একটা হিসাব লক্ষ্য করুন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এদেশে মাদ্রাসা ছিল ১২০০ আর এখন প্রায় ৭০ হাজার। অন্যদিকে তখন সিনেমা হল ছিল ১৬০০টি এখন ২৮৭টি, আর থিয়েটার ছিল ১৭০ টি এখন আছে মাত্র ৩৫টি। তাহলে এ দেশে কি শুধু মুসলিমরা বসবাস করে? অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য তো সিনেমা, গান থিয়েটারে বাঁধা নেই। তাহলে তারা কি করবে?
বক্তারা আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করেছিলেন সমস্যার কথা চিন্তা করে। সন্ত্রাস শুধু বোমাবাজিতে না। রাষ্ট্রীয়, বিরাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক, সামাজিক বহু ধরনের সন্ত্রাস আছে। এই সব সন্ত্রাসের মূল কারণ আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষিত হতে পারছেন না। পারলে সংসদে, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা সবাই শিক্ষিত হয়েও কেন সন্ত্রাসের পক্ষে কথা বলছে। অর্থমন্ত্রী কখনও বলেন চার কোটি টাকা কিছু না আবার চার হাজার টাকার জন্য কর বসান। এ বৈষম্য কি প্রমাণ করে? সাম্প্রদায়িকতা ছাড়া আর কিছু না। তাই প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো এ সকল বিষয়ে নজর রাখতে। বিশেষ করে শিক্ষা আর অর্থনীতি খাতে।
বাংলাদেশ সময়:০২৫৯ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এমএএম/এসএম/জেএম