ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদার অরফানেজ মামলার বিচারিক আদালত একই থাকছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
খালেদার অরফানেজ মামলার বিচারিক আদালত একই থাকছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (ফাইল ফটো)

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক আদালত পরিবর্তন চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ফলে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতেই মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

রোববার (২০ আগস্ট) এ আদেশ দেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী।

সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জাকির হোসেন ভূঁইয়া। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।

পরে খুরশীদ আলম খান জানান, কিছু পর্যবেক্ষণসহ আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে বিচারিক আদালতটিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

গত ০৬ আগস্ট হাইকোর্টে চতুর্থবারের মতো আদালত পরিবর্তনের আবেদন জানান মামলাটির প্রধান আসামি খালেদার আইনজীবীরা।

গত ১০ আগস্ট শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) আদেশের দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট। তবে ‘নট টুডে’ বলে উল্লেখ করায় সেদিন আদেশ হয়নি।  

আবেদনে বলা হয়, গত ২৭ জুলাই ওই আদালতের বিচারক মৌখিকভাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ০৩ আগস্ট খালেদার জামিন বাতিলে মাত্র আধা ঘণ্টার কারণ দর্শাও (শো’কজ) নোটিশ জারি করেন। এগুলো ছাড়াও নানা কারণে তার ওপরে খালেদা জিয়ার আস্থা নেই।    

এর আগে খালেদা জিয়ার আবেদন মঞ্জুর করে গত ১৪ মে তৃতীয়বারের মতো আদালত পরিবর্তন করে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে চালানোর আদেশ দিয়েছিলেন একই হাইকোর্ট বেঞ্চ। সে সময় মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছিল মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে।

সেবারের আবেদনে খালেদা বলেন, বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দুদকের আইন শাখার মহাপরিচালক ছিলেন। আর ওই সময় এ মামলাটির দেখ-ভাল করেছেন তিনি। তাই তার প্রতি খালেদা জিয়ার আস্থা নেই।    

এর দেড় মাস আগে গত ০৮ মার্চও বিচারকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে আদালত বদলে তার দ্বিতীয়বারের আবেদন মঞ্জুর করেছিলেন হাইকোর্ট। সে সময় মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছিল তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে। সেটি বদলে মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে মামলা স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়ে ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেন উচ্চ আদালত।

আর প্রথমবারের মতো হাইকোর্টের নির্দেশেই তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক পরিবর্তিত হয় ২০১৫ সালে। মামলার অভিযোগ (চার্জ) গঠনকারী বাসুদেব রায়ের পরিবর্তে বিচারক করা হয় আবু আহমেদ জমাদারকে। সেবারও খালেদা জিয়াই বিচারক পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছিলেন।

আগামী ২৪ আগস্ট মামলাটিতে ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ও আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষীর জেরার দিন ধার্য রয়েছে। একই আদালতে চলমান জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নুর আহমেদকে অসমাপ্ত পুন:জেরার দিনও রয়েছে ওইদিন।

এদিকে অনুমতি না নিয়ে বিদেশে যাওয়ায় দুই দুর্নীতি মামলায়ই খালেদা জিয়ার জামিন বাতিলের বিষয়েও একইদিন আদেশ দেবেন আদালত।

২০০৮ সালের ০৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এ মামলা করা হয়।

মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।

ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৭
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।