বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেল তিনটায় নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। জাগপার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপিকা রেহেনা প্রধানের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশগ্রহণ করেন।
প্রথমেই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের রূপরেখা দেন জাগপা প্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্য থেকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, সাবেক বিচারপতি এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে সরকার গঠনের সুপারিশ করা হয়।
লিখিত প্রস্তাবনায় বলা হয়-নির্দলীয় সরকার যে দিন শপথ নেবে সেদিনই বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তারা সেনাবাহিনী মোতায়েন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার না করা, নির্বিঘ্নে ভোটাদানের পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের রদবদল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমতুল্য সেনাবাহিনীর প্লাটুন অনুযায়ী একজনকে নির্বাহী ক্ষমতা প্রদান করার সুপারিশও করে দলটি।
অন্যদিকে এক-এগারো সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ও বর্তমান সরকারের শাসনামলে অতি উৎসাহী পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে দূরে রাখা এবং ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণে গণমাধ্যমকর্মীদের উন্মুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রতিও জোর দাবি জানায় দলটি।
এর আগে সকালে সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ২৩ দফা সুপারিশ করে। এতে তারা আগামী নির্বাচনে ইভিএমের বিপক্ষে, না ভোটের পক্ষে অবস্থান নেয়।
দলটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চালুরও সুপারিশ করেছে। ৫০ শতাংশ আসনে এলাকাভিত্তিক প্রত্যক্ষ ভোটে ও বাকি ৫০শতাংশ আসনে ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদ সদস্য নির্বাচন হতে পারে বলে মনে করছে তারা। আবার তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন তদারকি সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাবও করেছে দলটি।
এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে রাখা, ভোটার সংখ্যা অনুপাতে সংসদীয় আসন পুননির্ধারণ, প্রবাসীদের ভোটাধিকার, অনলাইন মনোনয়নপত্র জমা চালু, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের তৎপরতা বন্ধ, সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ করেছে দলটি।
গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসেছিল ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। ওইদিন বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট) এর সঙ্গে সংলাপ করার সময়সূচি ছিল। কিন্তু বন্যায় ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে সংলাপে আসেনি বিএনএফ।
২৮ আগস্ট (সোমবার) সকালে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল ও বিকেলে খেলাফত মজলিশের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি।
ঈদের পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরো ১৪টি দলের সঙ্গে সংলাপে বসার সময়সূচি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধিত অবশিষ্ট ২০ দলের সঙ্গে বসার সময় পরবর্তীতে ঘোষণা করবে তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৭
ইইউডি/আরআই