শুক্রবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মায়ানমারের আরাকানরাজ্যে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর মায়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর দমন-পীড়নের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্ব যখন সোচ্চার হয়ে উঠেছে, রুখে দাঁড়িয়েছে, প্রতিবাদ করছে তখন বাংলাদেশ সরকার প্রায় নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে। প্রথম দিকে তারা (বাংলাদেশ সরকার) কেবল বাঁধা-ই দেয় নি, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের এদিকে আসতে দেয়নি। আজকে যখন দেখছি, নাফ নদীর তীরে শিশুদের মরদেহ পড়ে আছে, নৌকা ডুবে শত শত মানুষ মারা যাচ্ছে এবং আরাকান রাজ্যের গ্রামগুলো পুড়ছে, তখন আমাদের সরকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছে।
কূটনৈতিক ও মানবিক দিক থেকে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে তারা (বাংলাদেশ সরকার) সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে নি। এটা পারে নি এ জন্যই যে, এ সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহীতা নেই। সে জন্যই তারা এ কাজ করে নি।
ফখরুল বলেন, ১৯৭৯ সালে এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে এসেছিল, তখন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান তাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন, খাদ্য দিয়েছেন ও চিকিৎসা দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে মায়ানমার সরকারকে বাধ্য করেছেন রোহিঙ্গাদের আরাকানরাজ্যে ফিরিয়ে নিতে। পরবর্তীকালে একইভাবে খালেদা জিয়া ১৯৯২ সালে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে আরাকানরাজ্যে ফেরত পাঠান।
আজকে এ সরকার প্রথমেই বলছে- এটা আমাদের দায়িত্ব নয়। প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা আমরা সৃষ্টি করিনি। সুতরাং দায়িত্ব আমাদের নয়। আজকে বিশ্বমানবতরার জন্য মানবিক কারণে যে কোনো দুস্থ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া, তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের মৌলিক দায়িত্ব। এটা পরিষ্কার করে আমাদের সংবিধানে উল্লেখ আছে। সুতরাং আমাদের সুনির্দিষ্ট দাবি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হোক, খাদ্য, নিরাপত্তা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। একই সঙ্গে দক্ষ কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে মায়ানমার সরকারকে বাধ্য করা হোক রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এনি, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার প্রমুখ।
মানববন্ধনে বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক অংশ নেয়। ফলে মানববন্ধন এক পযায়ে সমাবেশে রূপ নেয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের যানবাহন চলাচল। সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৭
এজেড/এসএইচ