এবার অন্য লড়াইয়ে রাজনীতির মাঠে নেমেছেন মাহবুবে আলম। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জন্মস্থান মুন্সীগঞ্জ-২ (লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ি) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান।
সম্প্রতি মুন্সীগঞ্জে-২ আসনের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ, স্কুলে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং দুর্গাপূজা উপলক্ষে দুঃস্থদের মাঝে শাড়ি ও মণ্ডপে নগদ অর্থ বিতরণ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ৫ লাখ টাকা খরচ করে কাঙালি ভোজেরও আয়োজন করেছেন।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কাজির পাগলা এ টি ইনস্টিটিউশনে শিক্ষার্থীদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, মুক্তিযুদ্ধের ১৫ খণ্ডের দলিলপত্র ও ৩০ খণ্ডের রবীন্দ্র রচনাবলী বিতরণ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। এ স্কুলেই ১৯৫৩ সালে নিজের শিক্ষাজীবন শুরু করেছিলেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে জাতীয় রাজনীতিতে নামার কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি সিরাজুল আলম খানের আমন্ত্রণে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে গিয়েছিলাম। ওইদিন মসজিদে অনেকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি কেন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, স্কুলে স্কুলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তখন আমি বলেছিলাম, আমি সামনে নির্বাচন করতে চাই। সেই থেকে সবাই জানেন যে, আমি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি’।
তার মতে, ‘রাজনীতি করতে হলে ত্যাগী হতে হবে। রাজনীতির অর্থ এই না যে, এলাম খালি হাতে, যাবো ভরা হাতে। রাজনীতির অর্থ হচ্ছে, যেভাবে এসেছি, সেভাবেই যাবো। সম্ভব হলে ভরা হাতে এসে খালি হাতে যাবো। নির্বাচন বা রাজনীতি করার অধিকার সবারই আছে। সবার এ চেতনাই ধারণ করা উচিত যে, রাজনীতির অর্থ হচ্ছে, দেশসেবা। জনগণ যেন এ কথা বলতে না পারেন, তিনি জনগণের অর্থে এই করেছেন, ওই করেছেন। এটিই হবে আমাদের সবার চিন্তা-চেতনা’।
এর কিছুদিন পরে লৌহজংয়ের পাঁচ শতাধিক বানভাসিকে শুকনা খাবার এবং কয়েকটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করেন তিনি।
তবে মাহবুবে আলম ১৫ আগস্ট উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসকে দুই লাখ টাকা অনুদান দিলেও তা না নিয়ে ফিরিয়ে দেন দলের নেতারা।
লৌহজং উপজেলার ৩২টি ও টঙ্গিবাড়ি ইউনিয়নের ৪৭টি মণ্ডপে নগদ আর্থিক সহায়তা এবং দুঃস্থ নারীদের মাঝে শাড়ি বিতরণকালে এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘১৫ আগস্টের গণভোজে অর্থ দিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে এসেছিলাম। দুই লাখ টাকা দিয়েছিলাম। সেখানে কিছু লোক আমার সে অনুদান নেননি। তারা ভেবেছিলেন- আমাকে এভাবে বিদায় করে দেবেন। আমি সে গণভোজ করেছিলাম ব্যক্তিগত উদ্যোগে, পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে’।
তিনি বলেন, ‘কেউ যদি মনে করেন, আমাকে নানা রকম ষড়যন্ত্র করে বিরত রাখবেন, তারা ভুল চিন্তা করবেন। যে ব্যক্তি যুদ্ধাপরাধীদের মামলায় থেকেছেন। জীবনের ভয় মুহূর্তে মুহূর্তে, তারপরেও আমি এগুলো থেকে বিরত হইনি। কাফনের কাপড় দেওয়া হয়েছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা অন্য ভয় দেখিয়ে আমাকে বিরত করবেন। এ ভয়টা কেন মনে হলো? কারণ সবার সঙ্গে যুক্ত করতে চাই নিজেকে। অন্য যারা আছেন ক্ষমতাসীন, যারা আওয়ামী লীগকে কুক্ষিগত করতে চান, তাদের প্রতি আমার বক্তব্য হলো- মুক্ত করো হে বন্ধন। আওয়ামী লীগকে বন্ধ করে রেখো না। এটি বঙ্গবন্ধুর দল, শেখ হাসিনার দল’।
মাহবুবে আলম বলেন, ‘যিনিই নির্বাচন করতে চান না কেন, আমি হই বা অন্য কেউ হোন, তাকে আসতে দেওয়া হোক। ভোটাররা বিচার-বিবেচনা করুক যে, কে উপযুক্ত। বন্ধ করে রাখার ক্ষমতা কারো নেই। কাউকে আবদ্ধ করে রাখা যাবে না, উচিতও নয়’।
সময় যতোই গড়াচ্ছে, অ্যাটর্নি জেনারেলও ততোই গণসংযোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
ইএস/এএসআর