আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, এই ইস্যু নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্যে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। শুধু রোহিঙ্গা ইস্যুই নয় বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরণের সমঝোতার কথা আওয়ামী লীগ চিন্তা করছে না।
এই ইস্যুতে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারা জানান, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে সরকার আশ্রয় দিয়েছে। সরকার তাদের সার্বিক সহযোগিতাসহ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সারা দেশের মানুষ সরকারের এই অবস্থানে সমর্থন দিয়ে এগিয়ে এসেছে। সকল রাজনৈতিক দল, মত নির্বিশেষে সবাই মনে করছে রোহিঙ্গাদের তাদের দেশে ফিরিয়ে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।
সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতায় ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের উপর চাপ তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ইস্যুতে জোরালো ভূমিকা নিয়েছেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছে তার দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই অবস্থানে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সাড়া এসেছে। বিষয়টি এখন আর বাংলাদেশের একার বিষয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না।
জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগদান শেষে নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরণের সমঝোতা নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাস ও হত্যার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আমি তাদের কাছে ফিরে যেতে আগ্রহী নই। তাই বিএনপির সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়া কারো উচিত হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ২২ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানে বলেন, বিএনপি একদিকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলে, অন্যদিকে সরকারের সমালোচনা করে। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারের আন্তর্জাতিক উদ্যোগের বিরুদ্ধেও তারা নেতিবাচক কথা বলছে। জাতীয় ঐক্যটা কি তাদের মুখে নাকি মনে জানতে চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন বিএনপি সঙ্গে ঐক্য নয়। আসলে আমরা বিএনপির সঙ্গে কিসের ঐক্য করবো। তারা ২০১৪ সালে, ১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। মিয়ানমারে যেভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটছে বিএনপি তো সেভাবেই আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। পার্বত্য শান্তি চুক্তির সময় তারা বিরোধিতা করে বলেছে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে। এই বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করলে কি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যে ঘটনা ঘটছে সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। শেখ হাসিনাকে নিখুঁতভাবে এই সমস্যা সমাধান করতে দিতে হবে। এটার দায়িত্ব জনগণ তাকে দিয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইতোমধ্যেই জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে। সারা দেশের মানুষ দল মত নির্বিশেষে সবাই একমত আছে। নতুন করে আর জাতীয় ঐক্যের কি আছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৭
এসকে/আরআই