ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

শিক্ষাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে সরকার 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
শিক্ষাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করছে সরকার 

ঢাকা: শিক্ষা হলো জাতির মেরুদন্ড। যে জাতি যতো শিক্ষিত সে জাতি ততো উন্নত। আর এ শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে সরকার ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। 

রোববার (২২ অক্টোবর) নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।  

রিজভী বলেন, সরকার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একে একে ধ্বংস করছে।

সবচেয়ে বেশি নৈরাজ্য চলছে এ খাতে। দলীয়করণ করে শিক্ষার মান ধ্বংস করা হচ্ছে। ঢাবিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধাবীদের রেখে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে দলীয় ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আবার পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দিতে বোর্ড থেকে নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষকদের।  

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের অস্ত্রবাজি ও দখলবাজিতে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে। এছাড়াও প্রশ্নপত্র ফাঁস থেকে শুরু করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা ধ্বংস করার সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ভোটারবিহীন সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এখন মরণ ব্যাধির নাম প্রশ্নপত্রফাঁস। এটা যেন এখন ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য হয়ে পড়েছে। এর পেছনে সরকারি দলের রাঘব বোয়ালরা জড়িত থাকায় কোনোভাবেই প্রশ্নফাঁস বন্ধ হচ্ছে না।  

তিনি বলেন, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর আমলেই প্রশ্নফাঁসের মতো অনৈতিক কর্মকান্ডের ক্রমবিস্তার আরো প্রসারিত হচ্ছে দিনকে দিন। বিগত ১০ বছরে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন, এসএসসি, এইচএসসি, জেএসসি, পিইসি, এমনকি নার্সিং পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে। কোনো কোনো পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলেও শিক্ষামন্ত্রী নির্লজ্জের মতো তা অস্বীকার করে পরে জনমতের চাপে সেই পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির মূল হোতারা ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ায় আজ পর্যন্ত এসব ঘটনার বিচার হয়নি।  


তিনি বলেন, দেশের একজন প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী বলেছেন, রাষ্ট্রকে ক্রিমিনাল স্টেটে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ।  

বিএনপির এ নেতা বলেন, গতকাল শনিবার (২১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা বলেছেন, ‘উন্নয়নের জোয়ারে দেখেন দেশ কোথায় চলে গেছে। আজ আমরা বিশ্বের জন্য এক বিস্ময়। আগামী ১০/১৫ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে আমাদের দেশ উন্নত বিশ্বের কাতারে যুক্ত হবে। ’ প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের লাগামহীন বক্তব্য দিতে জুড়ি নেই। মনে হয়-তারা আকস্মিকভাবে আসমানী বক্তব্য রাখছেন। বিনাভোটে আরও ক্ষমতায় থাকার লালসা থেকে তারা এসব কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীর তনয় ছাড়া অন্য উপদেষ্টাদের তো মাছিমারা কেরানীর চেয়ে বেশি কিছু করার নেই। একটি দেশে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকলে সাধারণ মানুষের যে কী দু:সহ জীবন হয় তা দেখেই বিশ্ববাসী বিস্মিত ও হতবাক।
 
তিনি বলেন, যে সময় উন্নয়নের জোয়ারের কথা তিনি বললেন সে সময় মানুষ উন্নয়নের জোয়ারে ঢাকা শহরে পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছেন। ঢাকা তলিয়ে গিয়ে সেখানে এখন ফায়ার সার্র্ভিসের নৌযান চলছে। অলিগলির সড়কগুলো যেন নালা খালে পরিণত হয়েছে। গত দু’দিনে স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েসহ অফিসগামীরা পানিতে ডুবে কিভাবে হাবুডুবু খেয়েছে তা মানুষ বিস্ময়েই তাকিয়ে দেখেছে।  


তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন-‘বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার রঙ্গিন স্বপ্ন দেখছে, সিইসি’র বক্তব্যে বিএনপি নেতারা মহা খুশি হয়েছেন’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-তাহলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে দুর্বোধ্য ধাঁধায় ফেলতে এর চাবিকাঠি কী তাহলে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা নিজেদের হাতে রেখেছেন ? দখল, দুর্নীতি, গুম, অপহরণসহ হরণের নীতি গ্রহণ করে আবারো ক্ষমতায় যাওয়ার দিবাস্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই আপনারা নির্বাচন কমিশনকে আওয়ামী মার্কা নির্বাচন করার প্রচেষ্টায় মশগুল আছেন। আপনার বক্তব্যেই প্রমাণিত হয় আপনারা নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করার নীলনকশা আঁটছেন। কারন প্রধান নির্বাচন কমিশনার একটি ঐতিহাসিক সত্য উচ্চারণ করতেই আপনারা বিচলিত হয়ে পড়েছেন।  

তিনি আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলগুলোর যে সংলাপ চলছে সেখানে আওয়ামী মহাজোটের দু’তিনটি দল ব্যতিরেকে সকলেই জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে সহায়ক ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছে। নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের পক্ষে জনমত গড়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশন কী করে সে বিষয়ে এখন জনগণ তীর্যক দৃষ্টি রেখেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অতীতে যাই করুন না কেন, এখন জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কাজ করতে পারলে ইতিহাসে তার স্থান ইতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।