সোমবার (২৩ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে রাজধানীর এলিফেন্ট রোডের নিজ বাসায় এম কে আনোয়ারের মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে শোকবার্তায় বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ এম কে আনোয়ার এর মৃত্যুতে তাঁর পরিবারবর্গের মতো আমিও গভীরভাবে শোকাহত ও ব্যথিত হয়েছি।
খালেদা জিয়া বলেন, রাজনৈতিক জীবনেও তিনি নিজ আদর্শে অটল থেকে রাজনৈতিক সংগ্রাম ও জনগণের সেবা করে গেছেন। রাজরোষে পড়া সত্ত্বেও তিনি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেননি, তাই বারবার কারাবরণসহ নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেও নিষ্ঠা ও সাহসিকতার সাথে অগণতান্ত্রিক সরকারের অসদাচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে গেছেন। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি কখনোই কোনো অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে মাথা নত করেননি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সবসময় থেকেছেন সামনের কাতারে।
শোক বার্তায় বিএনপি প্রধান আরো বলেন, নিজ এলাকায় শিক্ষার প্রসার ও জনকল্যাণমূলক কাজেও তাঁর অবদান স্মরণীয়। তাই জনগণের নিকট প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার কারণেই আদর্শনিষ্ঠ এম কে আনোয়ার বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জিয়াউর রহমান এর বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনকে বুকে ধারণ করে এম কে আনোয়ার স্বদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকারে বিএনপিকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। রাজনীতিতে যোগ দিয়ে যখনই গণতন্ত্র বিপদাপন্ন হয়েছে তখনই স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে গণতন্ত্রের পথে উত্তরণ এবং গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়নের জন্য এম কে আনোয়ার এর গৌরবময় অবদান দেশবাসী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তাঁর মৃত্যু জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্য মর্মস্পর্শী। দেশবাসী ও দলের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর শোকবার্তা
বাংলাদেশের রাজনীতি ও জনপ্রশাসনে এম কে আনোয়ার সাহেবের কৃতকর্ম অনেকদিন এদেশের শুভবুদ্ধির মানুষদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। হারানো গণতন্ত্র ফিরে পাবার আন্দোলনে এম কে আনোয়ার কখনোই পিছপা হননি। স্বৈরাচারের সকল নির্দয় উৎপীড়ন সহ্য করেও তিনি তাঁর ওপর অর্পিত রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন অনঢ় ও দ্বিধাহীনভাবে। অত্যাচারের রক্তচক্ষু তাঁর দৃঢ় মনোবলকে দুর্বল করতে পারেনি। নিজস্ব মতাদর্শে তিনি ছিলেন নির্ভয় ও অবিচল। তাঁর কর্মময় জীবনের সাফল্যের মূলে ছিল আদর্শনিষ্ঠ উদ্যম ও উদ্যোগ। অত্যন্ত বিনয় ও হাস্যোজ্জ্বল অভিব্যক্তির কারণেই মরহুম এম কে আনোয়ার জনগণ ও দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নিকট ছিলেন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব।
তিনি ছিলেন একজন উচ্চমার্গের রাজনৈতিক নেতা। স্বাধীনচেতা, স্পষ্টভাষী। বিনয়, সৌজন্য ও সহিষ্ণুতা ছিল তাঁর সহজাত। এই সমস্ত বৈশিষ্ট্যের কারণেই তিনি রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যে সুনাম অর্জন করেছিলেন তা এখনও তাঁর উত্তর প্রজন্মের কাছে এক উজ্জল দৃষ্টান্ত হিসেবে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। মরহুম এম কে আনোয়ার সমাজসেবা নানা কাজের সঙ্গেও আজীবন যুক্ত ছিলেন। সরকারের মন্ত্রী হিসেবে তাঁর অবদান এদেশের জনগণ কখনোই বিস্মৃত হবে না। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হলো। আমি তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করছি।
আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শুভানুধ্যায়ী ও পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৭
জেডএম/
** এম কে আনোয়ারের দাফন বুধবার কুমিল্লায়