১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর মাসে কুমিল্লা টাউন হল মিলনায়তনে জেলা দক্ষিণ যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়। আর ২০১১ সালের শেষের দিকে কুমিল্লা পৌরসভা ও সদর দক্ষিণ পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়।
সম্প্রতি সদরের সংসদ সদস্য হাজী বাহার কুমিল্লা মহানগর আ’লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এই কমিটিতে সিংহভাগ পদে তার সমর্থিত নেতাকর্মীরা স্থান পান। কয়েকটি পদ পান অপর গ্রুপের নেতাকর্মীরা। ফলে মহানগর যুবলীগের বেশিরভাগ পদে এমপি বাহারের সমর্থিত নেতাকর্মীরা স্থান পাবেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। থেমে নেই রেলমন্ত্রী মুজিব গ্রুপের নেতাকর্মীরাও ।
যে কারণে কমিটি ঘোষণায় বিলম্বঃ
অর্ন্তকোন্দল ও সংঘর্ষের আশংকায়ই কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের কমিটি ঘোষিত হচ্ছে না বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়। বিভিন্ন সূত্রমতে, সদরের সংসদ সদস্য হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের সাথে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও পরিকল্পনামন্ত্রী মোস্তফা কামাল ( লোটাস কামাল) এর কিছুটা বৈরিতা ও মন কষাকষি রয়েছে। এ কারণে কমিটি ঘোষণা করামাত্র বঞ্চিত গ্রুপটি তাতে নাখোশ হবেই। তখন তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না তারা। তখন এ নিয়ে বেঁধে যেতে পারে দ্বিমুখী বা ত্রিমুখী কুরুক্ষেত্র। গ্রুপে গ্রুপে সংঘর্ষ ও হানাহানির প্রবল আশঙ্কার কারণেই মূলত মহানগর কমিটি ঘোষণার কাজটি ঝুলে আছে।
তবে আশার কথা, বর্তমানে পরিকল্পনামন্ত্রী লোটাস কামালের সাথে এমপি বাহারের সম্পর্ক বেশ ভালো বলেই জানা গেছে। তাছাড়া রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হকের সাথেও আগের মতো দা-কুড়াল সম্পর্কটি এখন ততোটা আর নেই। তাই ভেবেচিন্তে সময় নিয়ে মহানগর যুবলীগ কমিটি গঠন করা হতে পারে। তাই নতুন কমিটি ঘোষণা করাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
মহানগর যুবলীগ কমিটিতে স্থান পেতে মরিয়া দু’গ্রুপঃ
মহানগর যুবলীগের কমিটিতে স্থান পেতে সদরের সংসদ ও কুমিল্লা মহানগর আ’লীগের সভাপতি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের গ্রুপের আহবায়ক পদে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক জিএস আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ ও যুগ্ম-আহ্বায়ক পদে কাউন্সিলর হাবিবুর আল আমিন সাদী, জেলা যুবলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক এ কে এম হাসান ইমাম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বোরহান মাহমুদ কামরুল, অজিতগুহ কলেজের সাবেক জিএস বাবু সঞ্জয় রায়, হান্নানুর রহমান বেলাল জোর তদবির শুরুছেন করছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউল হক মুন্না, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক অর্থ-সম্পাদক কবির উদ্দিন মিন্টু, মিঠু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রোকন উদ্দিন, দিদারুল হক আনোয়ার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল ইসলাম শাওন প্রমুখ।
অপরদিকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিব গ্রুপে রয়েছে একাধিক নেতাকর্মীর নাম। এ গ্রুপে আহবায়ক/সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তারেকুল হক তারেক এবং যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে কুমিল্লা সরকারি কলেজের জিএস, শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান খান পিন্টু , জেলা ছাত্রলীগের
সাবেক সহ- সভাপতি মীর সাব্বির আহমেদ, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগাঠনিক সম্পাদক কাজী নাহিদুল ইসলাম নাহিদ , শহর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুমন দাস, ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জসিম খান তদবির করছেন বলে জানা গেছে ।
আবদুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বলেন, কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহবায়ক পদের জন্য আমি একক প্রার্থী। আমার প্রতি কুমিল্লা মহানগরবাসী ও কুমিল্লা মহানগর আ’লীগের সভাপতি ও সদর সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহার উদ্দিন বাহার ভাইয়ের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
হাবিবুর আল আমিন সাদী বলেন, মহানগর যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে ইনশাল্লাহ আমিই সাধারণ সম্পাদক পদ পাবো বলে আশা করছি। কুমিল্লা সদরের সংসদ সদস্য ও কুমিল্লা মহানগর আ’লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দিক নির্দেশনায় আমি মাঠে থেকে যুবলীগের রাজনীতি করছি।
এ কে এম হাসান ইমাম বলেন, আমাকে যদি মহানগর যুবলীগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এক নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক কিংবা সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য মনে করা হয়, তাহলে আমিও ওই পদ প্রত্যাশী। ইনশাল্লাহ সদরের এমপি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের দোয়ায় আমি এই পদ পাবো বলে আশাবাদী।
অপর গ্রুপের আতিকুর রহমান খান পিন্টু বলেন, কুমিল্লার মাটি ও মানুষের নেতা রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক মুজিবের সঠিক দিক নির্দেশনায় গত ২৭ বছর ধরে কুমিল্লার রাজনীতিতে আমি সক্রিয় রয়েছি। আমি মহানগর যুবলীগের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
জেএম