শুক্রবার (০৯ মার্চ) দুপুরে মহানগরীর কেডিঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে, নির্যাতন করছে।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের মিছিল করতে বাধা দেওয়া হয়। জনসভা করতে বাধা দেওয়া হয়। স্লোগান দিতে বাধা দেওয়া হয়। পোস্টার লাগাতে দেওয়া হয় না। লিফলেট বিলি করতে গেলে গ্রেফতার করা হয়। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আপনাদের ওপর নির্ভর করি। এক সময় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিলো। সেই স্বাধীনতা জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। যে কারণে সাংবাদিকরা তাদের কাজের মাধ্যমে গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, এক দল সরকারি টাকায় গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে, প্লেন-হেলিকপ্টারে করে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী জনসভা করে বেড়াচ্ছে। আরেক দলের নেতা কারাগারে আবদ্ধ। তার দলের নেতাকর্মীরা নেত্রীর মুক্তি এবং একটি অংশগ্রহণ ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধমূলক একটা সংসদ প্রতিষ্ঠার জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও বাধা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এতকিছুর পরেও আমরা বলতে চাই, যত পারেন আমাদের নেতাকর্মীদের অত্যাচার করেন। শুধুমাত্র নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন দিন। জনগণ যদি শুধু ভোট দিতে পারে দেখবেন ভোটের বাক্সে বিপ্লব ঘটবে। এখন চলার পথে দেখছি রাস্তাঘাটের ওপর নৌকা উঠেছে, মোড়ে মোড়ে নৌকা টানিয়ে রাখা হয়েছে। আজকাল নদী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নদীতে পানি নেই। পদ্মা নদীতে পানি নেই। প্রমত্তা তিস্তাতেও পানি নেই। নদীতে নৌকা চলার অবস্থা নেই। সেই নৌকা এখন আকাশে উঠেছে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, গত মাসের ২৬ তারিখে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে আমরা জনসভা করার অনুমতি নিই। এখন শুনছি আওয়ামী লীগের একটি অঙ্গ সংগঠন সেখানে সভা ডেকেছে। তারা পায়ে পা দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এখন পুলিশ বলছে, হাদিস পার্ক কেন আশেপাশের রাস্তাতেও সমাবেশ করা যাবে না। তারা আসলে ১০ তারিখে সভা করতে চায়নি। আমাদের সমাবেশ নষ্ট করতে চেয়েছে। তারা সরকারে আছে, তাই সরকারের সহযোগিতায় এ অপকৌশল কাজে লাগিয়েছে তারা। আমরা এর নিন্দা জানাই।
দলের স্থায়ী কমিটির নির্দেশ অনুযায়ী আমরা সব কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করে আসছি। আমরা কোনো ধরনের উস্কানিতে পা দিচ্ছি না। আমরা কোনো বিশৃঙ্খলার ধারে কাছেও যাচ্ছি না। এটা আমাদের দুর্বলতা নয়। আমরা এখন দলীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তাতেই সভা করবো। আমরা আশা করছি আমাদের লোকদের গ্রেফতার করা হবে না। সভায় আসতে বাধা দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ বিএনপিসহ ২০দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েছে। আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় তিনি জোটের অন্যতম শরীক ফেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইনকে আটকের নিন্দা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মহানগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা।
উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, সেকেন্দার জাফরুল্লাহ খান সাচ্চু, তারিকুল ইসলাম, ফকরুল আলম, শেখ মোশাররফ হোসেন, মাহবুব কায়সার, আজিজুল হাসান দুলু প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৯, ২০১৮
এমআরএম/ওএইচ/