শেখ হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়ে শপথের পরদিন মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) দায়িত্ব নিয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, দক্ষ প্রশাসন গড়ে তুলতে অবশ্যই ভালো কিছু দেখতে পাবেন।
প্রশাসনে দুর্নীতি নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের কাজে যদি কোনো অন্তরায় বা বাধা বা ত্রুটি থাকে তাহলে প্রথমে সেগুলো দূর করা হবে।
‘জনপ্রশাসনে অনেক স্মার্ট ও নলেজেবল অফিসার আছে। ভালো ব্যুরোক্রেসি ছাড়া উন্নত দেশ সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রী সুনিপুণভাবে চিন্তা করছেন যাতে আমরা একটা ভালো, দক্ষ প্রশাসন গড়ে তুলতে পারি। অবশ্যই আপনারা ভালো কিছু দেখবেন। ’
প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বৈষম্য দূর করতে পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি দশম সংসদের একজন সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার এলাকা থেকে যারা ক্যাডার সার্ভিসে আছেন তারা আমার কাছেও অভিযোগ-অনুযোগ করেছিলেন যে আমি যাতে আমি এ বিষয়ে সংসদে অবদান রাখি। সেক্ষেত্রে বিষয়গুলো নিয়ে আমিও অবহিত আছি।
‘প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু অনেকগুলো সলিউশন ইতোমধ্যে দিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। ’
প্রশাসন নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়কে কতটা শক্তভাবে সামলাতে পারবেন- প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার মাথার উপর আছেন প্রধানমন্ত্রী। আশা করি তার সহযোগিতায় সবগুলো বিষয়ই আমরা সুন্দরভাবে দেখতে পারবো। এখানে কোনো সমস্যা হবে না।
আপনি কী মনে করেন মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ করা উচিত- প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই, কারণ গণতন্ত্রে জবাবদিহিতার একটা ব্যাপার আছে। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের তো জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতেই হবে।
এক্ষেত্রে আপনারা ভূমিকা কী হবে- প্রশ্নে বলেন, আমার ধারণা একাদশ জাতীয় সংসদ এ ব্যাপারে ভালো পদক্ষেপ নেবে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। এবার আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে যেতে চাচ্ছি। সেক্ষেত্রে আমি বলি গণতন্ত্রের ভীত মজবুত করতে চাই দুর্নীতি দমনের কোনো বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী হয়েছে, আগামীতে আরও শক্তিশালী হবে। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ঘোষণা দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এটা হবে। যখন এটা ঘোষণা করা হয়েছে এর মানে অনেক চিন্তা-ভাবনা সুপরিকল্পনা করেই ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন সেটা করেন। আমরা চাইবো খুব দ্রুত এটা হয়ে যাবে।
জনপ্রশাসনের দায়িত্ব পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই দেশটিকে আরো উন্নত দেশে পরিণত করা যায় সেভাবে সব দিক থেকেই সাজাচ্ছেন। প্রশাসনকেও তিনি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে, সতর্কতার সঙ্গে একটা লক্ষ্য সামনে রেখে তিনি সাজাচ্ছেন সেটি হচ্ছে আমাদের জনপ্রশাসন হবে জনবান্ধব প্রশাসন।
জনপ্রশাসনের আগের মন্ত্রী সৈয়দ আশফুল ইসলামের মৃত্যুর পর নতুন মন্ত্রিসভায় আর কোনো নতুন মন্ত্রী দেওয়া হয়নি।
সৈয়দ আশরাফের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের অত্যন্ত ভালোবাসার মানুষ, জনপ্রিয় নেতা প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী ছিলেন। তিনি প্রয়াত হয়েছেন, তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। এই মন্ত্রণালয়ে তিনি যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন।
‘প্রধানমন্ত্রী যেভাবে যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন যে নির্দেশনা দেবেন সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করাটাই আমার কাজ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। এটার পূর্ণ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নিজে। প্রধানমন্ত্রী চান আমাদের এই প্রশাসন অত্যন্ত দক্ষ, গতিশীল ও জনবান্ধব হবে যাতে গ্রামের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জনপ্রশাসনের সমস্ত সেবাগুলো অত্যন্ত সহজ-সাবলীলভাবে পেতে পারে। সেজন্য আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা আছে সেটা সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করবো। ’
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে প্রবেশের পর ১ নম্বর ভবনে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে নতুন প্রতিমন্ত্রীকে বরণ করে নেন। এসময় জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ