তার আগেই প্রকৃতির নিয়মে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিতে হলো ‘স্বৈরশাসক’ তকমা পাওয়া এরশাদের। অথচ নিজের রুচি ও পরিকল্পনা মতো বহুতল নতুন ভবন করেছিলেন তিনি।
এরশাদের রাজনৈতিক উত্থান-পতনের বড় একটি অংশজুড়েই রয়েছে এই ‘পল্লীনিবাস’। রংপুরে এলেই এখানে থাকতেন তিনি। এছাড়া এই বাসভবনের নবনির্মিত কমপ্লেক্সে নিজের সমাধির বিষয়ে ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন এরশাদ।
তবে জীবনের শেষ সময়ে এসে আগের স্থাপনা ভেঙে বহুতল ভবন তৈরি করলেও তা দেখে যেতে কিংবা একরাত অবস্থান করতে পারলেন না সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। অসুস্থ শরীর নিয়ে ঢাকা থেকে ‘পল্লীনিবাস’ দেখতে আসার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
রংপুর জেলা জাতীয় পার্টির প্রচার সম্পাদক মমিনুল ইসলাম রিপন বাংলানিউজকে জানান, রংপুরের দর্শনা এলাকায় অবস্থিত এরশাদের ব্যক্তিগত আবাস ‘পল্লীনিবাস’। এটি সংস্কার করে তিনতলা ভবন তৈরি করা হচ্ছে। এতোদিন বাউন্ডারির মধ্যে আলাদা আলাদা ভবন ছিলো। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ থাকতেন দ্বিতল ভবনে। আর অন্য স্টাফদের ছিলো একতলা ভবন। পুরনো ভবন ভেঙে এখন তিনতলা কমপ্লেক্স করা হচ্ছে। দ্বিতীয় তলায় এরশাদ ও ছেলে এরিকের কক্ষ তৈরি করা হয়েছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলার কাজ শেষ, তৃতীয় তলার ফিনিশিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি জানান, গত ২৮ জুন রংপুরে আসার কথা ছিল এরশাদের। সফরে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিলো না। বাড়ির নির্মাণ কাজ দেখতেই এবং নির্মাণাধীন বাড়িতেই এবার ওঠার কথা ছিল তার। দুই রাত অবস্থান শেষে ৩০ জুন তার ঢাকায় ফেরার সূচিও চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে এরশাদ রংপুরে আসতে পারেননি। অন্তত বাড়িটি দেখার জন্য হেলিকপ্টারে করেও তার আসার কথা ছিল। কিন্তু সেটাও আর সম্ভব হয়ে উঠলো না।
জানা যায়, সর্বশেষ গত ৩ মার্চ রংপুর সফরে এসেছিলেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তখনও বাড়ির কাজ দেখতেই রংপুরে এসেছিলেন জাপা চেয়ারম্যান।
কিন্তু রোববার (১৪ জুলাই) সকালে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে চিরবিদায় নেন সাবেক এই রাষ্ট্রপতি। মারা যাওয়ায় জীবদ্দশায় আর ‘পল্লীনিবাস’ দেখা হলো না এরশাদের। তাই রংপুরের মানুষের দাবি সাবেক এই রাষ্ট্রপতিকে ‘পল্লীনিবাসেই’ দাফন করা হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৯
জেডএস/