সোমবার (২২ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণফোরাম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক আবু সাইয়ীদ।
ড. কামাল বলেন, বন্যা থেকে মানুষকে, এলাকাগুলোকে, দেশকে বাঁচাতে হলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা কিছু করবো। যেন আমরা সরাসরি অবদান রাখতে পারি। দেশের স্বাধীনতালাভের ৪৮ বছর হয়ে গেছে, এখন থেকে যে ঘাটতিগুলো আছে, সেগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এটা কাউকে দোষারোপ করার জন্য নয়। আমাদের বাঁচার জন্য চিহ্নিত করতে হবে। কেন এটা হচ্ছে, কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা ঠিক করতে হবে।
গণফোরাম সভাপতি বলেন, বন্যার বিষয়টি আমাদের এক নম্বর চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। সামনে আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। আগামী দশকগুলোতে যেন এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন না হই। এই চিন্তা সামনে রেখে, সাংবাদিক সমাজের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে আসল জিনিসগুলো চিহ্নিত করতে পারি। করণীয় কী কী, সে বিষয়ে দেশে একটা ঐকমত্য গড়ার চেষ্টা করি।
লিখিত বক্তব্যে আবু সাইয়ীদ বলেন, কুড়িগ্রামে বিগত কয়েকদিন ধরে গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) আ ম সা আ আমিনের নেতৃত্বে ত্রাণ বিতরণের টিম কাজ করছে। সেখানে বহু প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেনি। খাবার নেই, ওষুধ নেই এবং পানি নেই। এবার সাহায্য সংস্থার লোকজনও তেমন তৎপর নয়। অথচ বন্যার প্রকোপ এবার সবচেয়ে বেশি। আর কুড়িগ্রামে ৭০ দশমিক ০৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। বন্যাদুর্গত ১২ লাখ লোকের জন্য দেড় সপ্তাহে সরকার থেকে বরাদ্দ হয়েছে জনপ্রতি মাত্র ১ দশমিক ১২ পয়সা, চাল ৬৬ গ্রাম এবং শুকনো খাবার ৩ হাজার প্যাকেট। এটি রিলিফের নামে প্রহসন।
তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাজেটে ৭ হাজার ৯ শ’ ১৪ কোটি টাকা, এর সঙ্গে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট যোগ করলে দাঁড়ায় ১৭ হাজার ৭শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এত টাকা বাজেট-বরাদ্দ সত্ত্বেও বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবনযাত্রার তেমন পরিবর্তন হয়নি, হয়েছে গুটিকয় কর্মকর্তা, আমলা ও ঠিকাদারের। ।
আবু সাইয়ীদ বলেন, বানভাসী মানুষের নিরাপদ জীবন ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারি ত্রাণ তৎপরতা পর্যাপ্ত নয়, বেসরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন, জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণপূর্বক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ভিত্তিতে রিলিফ কমিটি করে ত্রাণ তৎপরতা চালানো, নদীভাঙা চরাঞ্চলের বিপন্ন মানুষদের জন্য ত্বরিত গতিতে ত্রাণ তৎপরতা গ্রহণ, চিলমারী-রাজীবপুর ও রৌমারী এলাকাসহ অধিকতর বন্যা আক্রান্ত উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের নেতা সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দায় আফ্রিক, মোহাম্মদ আজাদ হোসেন, লতিফুর বারী হামীম প্রমুখ ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৯
এমএমআই/এইচএ/