শুক্রবার (২৬ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত এক সপ্তাহে তার (খালেদা জিয়ার) ওজন অনেক কমে গেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ১৭ মাস যাবত রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় একটি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটার পর একটা মামলায় তার মুক্তি ও জামিনকে বিলম্বিত করা হচ্ছে। যেসব মামলায় তার জামিনপ্রাপ্য সেসব মামলায়ও তিনি জামিন পাচ্ছেন না। এই ১৭ মাসে তার শারীরিক অবস্থার অনেক অবনতি হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা দেখেছেন তিনি (খালেদা জিয়া) যখন কারাগারে গিয়েছেন তখন সুস্থ অবস্থায় হেঁটে গিয়েছেন। এখন তিনি হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারছেন না। প্রকৃত অবস্থা তার চেয়েও ভয়াবহ। আমি ঈদের আগের দিন অনুমতি পেয়েছিলাম ও তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আমি দেখেছি, তার রুমে বসার একটি চেয়ার আছে সেটিতে তিনি বসেছেন কিন্তু তাকে বসিয়ে দিতে হয়েছে। তিনি এখন বিছানা থেকে একা উঠতে পারেন না। দু’জন সহায়তা করে তাকে বিছানা থেকে উঠাতে হয়। হুইল চেয়ারে বসিয়ে ওয়াশ রুম কিংবা বিছানায় নিতে সাহায্য করতে হয়।
ফখরুল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তিনি গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সময় লড়াই সংগ্রাম করেছেন। তিনি দুইবার বিরোধীদলের নেতা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি দুই সন্তানসহ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। এখন তার সঙ্গে এইভাবে চরম অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। একজন প্রথম শ্রেণির বন্দির সঙ্গে যে আচরণ করা হয় তার সঙ্গে এরচেয়েও খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। সঠিকভাবে তার খাবার-দাবার দেওয়া হয় না। সবচেয়ে বড় কথা তার চিকিৎসা, যেটা কোনোভাবেই এখানে সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জিহ্বায় ঘা হয়েছে, সেজন্য তিনি সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। তার দাঁত শার্পনেস হয়ে গিয়েছিল, সেটা গ্রাইন্ডিং করে কমানো হয়েছিল। সেটি আবার বেড়েছে। তার দাঁতের রুট-ক্যানেল করা দরকার। তিনি ইনসুলিন নিচ্ছেন ও ডায়াবেটিসের ওষুধ খাচ্ছেন, তারপরও তার ডায়াবেটিস ২০ এর নিচে নামছে না। হাত দিয়ে কিছু ধরতে পারেন না। দুই সোল্ডার ফ্রোজেন হয়ে গেছে। হাঁটা খুব দরকার, কিন্তু হাঁটতে পারছেন না। এমনতাবস্থায় যে তারপক্ষে হাঁটা সম্ভব নয়।
‘আমরা তার স্বাস্থ্য নিয়ে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তাকে কারাগারে নেওয়ার পরে সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশে যেসব মামলায় নরমালি জামিন হয়ে যায় সেগুলোতেও বিলম্ব করাচ্ছে। নিম্ন আদালততো বটেই উচ্চ আদালতেও বিভিন্ন রকম কারসাজি করে তার জামিন বিলম্বিত করছে। ’
এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, জরুরি ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৯
এমএইচ/ওএইচ/