রোববার (২৮ জুলাই) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেঙ্গু ও গুজব মোকাবিলায় ১৪ দলের উদ্যোগে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।
সিটি করপোরেশনের মেয়রদের উদ্দেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আপনারা নার্ভাস হবেন না।
‘আপনারা কম কথা বলে এডিস মশার উৎস ধ্বংস করতে কাজ করুন। সেক্ষেত্রে একটি সমন্বিত কমিটি করে আলোচনার মাধ্যমে কাজ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মশার উৎস ধ্বংস করতে কাজে লাগান। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন। ’
গুজব রটানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলবো, গুজব রটনাকারীদের আটক করে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা কোনোদিনও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেবো না। প্রিয়া সাহার জন্য তা নষ্ট হবে না। আমরা সব ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করবো।
জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, সরকার ও প্রশাসন সজাগ আছে। সুতরাং ডেঙ্গু নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শেখ হাসিনার সরকার জঙ্গি দমনে যেমনি সফল হয়েছে, ডেঙ্গু দমনেও তেমনি সফল হবে। গুজবে সাময়িক কুয়াশা তৈরি হতে পারে, এতে কিছু মানুষের ক্ষতিও হতে পারে। কিন্তু গুজব রটনাকারীরা সফল হবে না।
তিনি বলেন, দেশের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও কোনো শিশু নিখোঁজ হয়নি। যদি কেউ নিখোঁজের প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। এডিশ মশার কামড়ে ডেঙ্গু জ্বর হয়, কিন্তু প্রিয়া সাহার কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হবে না।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, একটি মহল গুজব ছড়িয়ে দেশের অগ্রগতিকে নস্যাৎ করতে চায়, স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করতে চায়, মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চায়। প্রিয়া সাহাকে অর্গানাইজড ওয়েতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে অন্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান গেলেও সহজে দেখা করতে পারে না। অথচ প্রিয়া সাহা এতো সহজে দেখা করতে পারলো!
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, জামায়াত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। জামায়াতের এই অপপ্রচার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি জামায়াতকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। এটা করতে না পারলে ষড়যন্ত্র বন্ধ হবে না। জামায়াতকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, আগে থেকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি এই পর্যায়ে পৌঁছাতো না। গুজব যারা ছড়াচ্ছে তাদের আটক করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাহলে এই গুজব ছড়ানো বন্ধ হবে।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা ও খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করার দিকে যাচ্ছে। মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি কমিটি গঠন করা দরকার। এই পরিস্থিতি যাতে আগামীতে আর না হয়, সে জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে।
এসময় বক্তারা ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সমন্বিতভাবে একটি কমিটি গঠনের পরামর্শও দেন। প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের এডিস মশার উৎস ধ্বংসে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে তারা মত দেন। এছাড়া গুজব বন্ধে এটি রটনাকারীদের আটক করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনারও পরামর্শ দেন তারা।
আলোচনায় আরও অংশ নেন- আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সিনিয়র সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আব্দুল কাইয়ুম মুকুল, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অধ্যাপক নিম চন্দ্র ভৌমিক, প্রকৌশলী নেতা নুরুজ্জামান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৯
এসকে/এসএ