শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় এক সেমিনারে বক্তব্যে ডেঙ্গু নিয়ে স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘ডেঙ্গু এলিট শ্রেণির একটি মশা।
তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘মন্ত্রীর এহেন বক্তব্যকে ‘টক অব দি সেঞ্চুরি’ বলবো নাকি ‘শক অব দি সেঞ্চুরি’ বলবো, এ নিয়ে দ্বিধায় আছি। মধ্যরাতের নির্বাচন করে আওয়ামী মন্ত্রিসভায় এডিস মশাবিস্তারের মতো গবুচন্দ্র মন্ত্রীদেরও বিস্তার ঘটেছে। দেশব্যাপী যেমন এডিস মশারবিস্তারে কোনো বিরতি দেখা যাচ্ছে না, ঠিক তেমনি নব কলেবরে গবুচন্দ্র মন্ত্রীদেরও হাসি-তামাশা উদ্রেককারী কথাবার্তারও কমতি দেখা যাচ্ছে না। পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কোন ব্যুরো থেকে উল্লিখিত তথ্যসমূহ সংগ্রহ করেছেন তা জানালে দেশবাসীর উপকার হতো। দেশ উন্নত হলে যদি রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায় তাহলে লন্ডন, নিউইয়র্ক, প্যারিস, কোপেনহেগেন ইত্যাদি উন্নত দেশের শহরগুলোতে ডেঙ্গুতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাতো। এহেন মন্ত্রীদের উদ্ভট বোলচালে জনজীবন ডেঙ্গুর মতোই বিপর্যস্ত। আসলে ডেঙ্গু নয়, আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের মস্তিস্ক পরীক্ষা করা দরকার। ’
বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিবিসির সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন-এডিস নিয়ে মিডিয়ার বাড়াবাড়িতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মূলত মেয়র থেকে শুরু করে মন্ত্রীরা এমনকি প্রধানমন্ত্রীও ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশাসহ বিভিন্ন দুর্যোগে ঠাট্টা মশকরা করছেন। অথচ সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে কোনো ঠাঁই নেই। ডেঙ্গু রোগীতে ছেয়ে গেছে সব হাসপাতাল। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও রক্ত পরীক্ষা করতে পারছে না রোগীরা। কেউ কেউ অনেক কষ্ট করে রক্ত পরীক্ষা করেও রিপোর্ট পেতে হয়রানির শিকার হচ্ছে। যেদিন রিপোর্ট দেওয়ার কথা বলা হয়, সেদিন রোগীরা রিপোর্ট পান না। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও রিপোর্ট নিয়ে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের পরিবারগুলোকে। আবার হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরেও সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে অসংখ্য শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ। হাসপাতালে বেড না পেয়ে মেঝেতে কাতরাচ্ছে শিশু বাচ্চারা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো সক্ষমতা নেই এই সরকারের। উন্নয়নের নামে পকেট ভারী করার জন্যই আজকে ডেঙ্গুর মতো এই দুর্যোগ মোকাবেলায় অক্ষম সরকার। ’
কারাবন্দি বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ। বারবার ইনস্যুলিন পরিবর্তন এবং ইনস্যুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি করার পরও কোনো অবস্থাতেই তার সুগার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে গভীর মাস্টারপ্ল্যানে ব্যস্ত। এই মাস্টারপ্ল্যান হচ্ছে-গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তূপের ওপর জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অন্যের কাছে বিকিয়ে দেওয়া। ’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/