আগামী সোমবার (১২ আগস্ট) দেশে উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা। এবারও খালেদা জিয়ার ঈদ কাটছে কারাহেফাজতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে।
খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী রহমান ও তার দুই মেয়ে কয়েকদিন আগে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছেন। তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে গুলশানের বাসায় ঈদ করবেন। ঈদের দিন শাশুড়ি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন শর্মিলী।
প্রতিবছর দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন শুরু হয় দলীয় নেতাকর্মীদের। খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় গত বছরের মতো এবারও তা আর হচ্ছে না। তবে নেত্রীর অনুপস্থিতিতে এবার ঈদের নামাজের পরপরই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার নিজ জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ করবেন। তিনি ইতোমধ্যে সেখানে চলে গেছেন। ঈদের একদিন পর বুধবার (১৪ আগস্ট) মহাসচিব ঢাকায় ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারী কৃষিবিদ ইউনুস আলী।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঈদ করবেন ঢাকায়। তিনি ঈদের পরের দিন নিজ এলাকা কুমিল্লায় যাবেন। সেখানে দলীয় নেতাকর্মী ও আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন। ড. আব্দুল মঈন খান নিজ নির্বাচনী এলাকা নরসিংদীর পলাশে ঈদ করবেন বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস এবং নজরুল ইসলাম খান ঈদ করবেন ঢাকায়। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী নিজ নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে ঈদ করবেন। স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতে আছেন। অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে সেখানে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। সালাহ উদ্দিন জামিনে থাকলেও ভারত ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাকে ভারতেই ঈদ করতে হচ্ছে।
দলের স্থায়ী কমিটির নতুন দুই সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সিরাজগঞ্জে ও সেলিমা রহমান ঢাকায় ঈদ করবেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম), শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু ঢাকায় ঈদ করবেন।
ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ময়মনসিংহে ঈদ করবেন। ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন ঈদ করবেন তাদের নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামে।
ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আছেন। সপরিবারে তিনি সেখানেই ঈদ করবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আমেদ, রিয়াজ রহমান, সুকোমল বড়ুয়া, আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, প্রফেসর ডা. সিরাজউদ্দীন আহমেদ, প্রফেসর ডা. আব্দুল কুদ্দুস ঈদে থাকছেন ঢাকায়।
দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ গত বছরের মতো এবারও নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদ করবেন। যুগ্ম-মহাসচিব আসলাম চৌধুরী কারাগারে আছেন, সেখানেই কাটবে তার ঈদ। অন্য যুগ্ম-মহাসচিবদের মধ্যে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল ঢাকায়, মজিবুর রহমান সরোয়ার বরিশালে, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ঢাকায়, খায়রুল কবির খোকন নরসিংদী ও হারুন-অর রশিদ এমপি চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদ করবেন।
এছাড়া দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন নিজ এলাকা গাজীপুরের কালীগঞ্জে, এমরান সালেহ প্রিন্স ময়মনসিংহে এবং শামা ওবায়েদ ফরিদপুরে ঈদ করবেন। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার ঢাকায়, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এমপি ঢাকায়, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকুও ঢাকায় ঈদ করবেন।
এ বিষয়ে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদ অর্থ আনন্দ। কিন্তু সে আনন্দ আমাদের মাঝে নেই। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দলের কারও ঈদ আনন্দের হতে পারে না।
শায়রুল জানান, ঈদের নামাজ ঢাকায় আদায় করে তিনি নিজ জেলা নেত্রকোণায় যাবেন।
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের অপর সদস্য শামসুদ্দিন দিদার জানিয়েছেন, তিনি ঢাকায় ঈদ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/