ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস ‘অবৈধ’, বর্জনের ঘোষণা ৬ নেতার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস ‘অবৈধ’, বর্জনের ঘোষণা ৬ নেতার

ঢাকা: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ১০ম কংগ্রেসকে ‘অবৈধ ও প্রহসনের কংগ্রেস’ অভিহিত করে তা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির ছয় কেন্দ্রীয় নেতা। তাদের অভিযোগ, বর্তমানে মার্কস- লেনিনবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে সুবিধাবাদী পার্টিতে পরিণত হয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি। 

ওয়ার্কার্স পার্টির কংগ্রেস ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে বর্জনের ঘোষণা নিজেরা বর্জনের পাশাপাশি দলের অন্য নেতাকর্মীদেরও ওই কংগ্রেসে অংশ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ওই ছয় শীর্ষ নেতা।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) পার্টির ওই ৬ নেতার সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।

ছয় নেতা হলেন- দলটির পলিট ব্যুরোর সদস্য নূরুল হাসান ও ইকবাল কবির জাহিদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জাকির হোসেন হবি ও মোফাজ্জেল হোসেন মঞ্জু এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কন্ট্রোল কমিশন চেয়ারম্যান অনিল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় কমিটির বিকল্প সদস্য তুষার কান্তি দাস।  

পড়ুন>>মেননের দুঃখপ্রকাশ, ১৪ দলের সন্তোষ
 
তারা বলেন, ১৯৯২ সালের ৪ মে ঐক্য কংগ্রেসে গৃহীত মতাদর্শগত, নীতি ও কৌশল থেকে পার্টি ক্রমান্বয়ে দক্ষিণপন্থি, বিলোপবাদী ধারায় অধঃপতিত হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে পার্টির অভ্যন্তরে মতাদর্শগত বিচ্যুতি, বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তি ও বিলোপবাদী রাজনীতির বিরোধিতা করে আসছি।  

‘১৪ দলের সঙ্গে কর্মসূচিভিত্তিক ঐক্য, হাতুড়ি ছেড়ে নৌকা মার্কায় নির্বাচন ও সরকারে মন্ত্রিত্ব গ্রহণের মাধ্যমে পার্টির নীতি আদর্শকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে। বরিশালে জেলা সম্মলনে অগণিত পাটি কর্মী এবং জনগণের দাবির মুখে ২০১৮ সালের প্রহসনের নির্বাচন সম্পর্কে পার্টি সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন যে সত্য উচ্চারণ করেছিলেন পরদিন তার ইউটার্ন পাটি অনুসৃত বর্তমান রাজনীতিরই অনিবার্য ফল। ’

ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওয়ার্কার্স পার্টি বর্তমানে মার্কসবাদী- লেনিনবাদী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে সংস্কারবাদী, সুবিধাবাদী পার্টিতে পরিণত হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব আজ রাজনৈতিক দুর্নীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক দুর্নীতিতে আক্রান্ত, বাস্তবতার নামে বুর্জোয়া লেজুড়বৃত্তির রাজনৈতিক লাইন ও জোটনীতি তথা আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্থায়ী ঐক্যের যে নীতি-কৌশল গ্রহণ করে চলেছে তাতে ওয়াকার্স পার্টি অধঃপতিত হয়ে দেউলিয়া পার্টিতে পরিণত হয়েছে।  

‘অন্যদিকে আন্তঃপার্টি সংগ্রাম তথা দুই লাইনের সংগ্রামকে গলা টিপে হত্যা করতে শীর্ষ নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে বিভিন্ন জেলায় অবিশ্বাস্য সংখ্যক পার্টি সভ্যপদ প্রদানের মাধ্যমে ভুয়া প্রতিনিধিদের ১০ম পাটি কংগ্রেসে উপস্থিত করানোর সব আয়োজন ও প্রস্ততি সম্পূর্ণ করেছে। সভ্যপদ যাচাই-বাছাই এর প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। ’ 

পার্টির ছয় নেতা বলেন, পার্টি সভ্যপদ যাচাই না করে অবৈধ প্রতিনিধিদের নিয়ে কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হলে তা হবে অবৈধ কংগ্রেস। তাই নতজানু আপোষকামী তথা তালমিল করে চলার নীতি পরিহার করে আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে আমরা ১০ম পার্টি কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  

‘লাল পতাকাকে সমুন্নত রাখতে দক্ষিণপন্থি সুবিধাবাদকে পরাস্ত করে সত্যিকারের বিপ্লবী পার্টি, কমিউনিস্ট ঐক্য, বাম- গণতান্ত্রিক ঐক্য গড়ে তুলতে সব পার্টি কমরেডদের এই প্রহসনের কংগ্রেসে অংশগ্রহণ না করার আহ্বান জানাচ্ছি। ’

ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিপর্যয়, দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়ন যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে তাতে আর ১৪ দল ও সরকার নয়, পার্টির স্বাধীন ভূমিকা নিতে হবে। অপরদিকে বিএনপি- জামায়াত, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক শাক্তির সব প্রকার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সজাগ, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৯
এসকে/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।