সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হকসহ তার সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের অন্তত ৩০ জনকে পেটায় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা।
এ বিষয়ে পদক্ষেপ জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ভিন্ন মত প্রকাশের অধিকার প্রত্যেকেরই আছে। ডাকসুর ভিপি আমাদের সমালোচনা করতে পারে, সরকারের সমালোচনা করার অধিকার তার আছে। এখানে অন্যান্য যে বহিরাগত আসে, এসব কথা অনেকে বলে। যতকিছুই হোক যে হমালাটা হয়েছে এটা নিন্দনীয় এবং আমি এটার নিন্দা করি।
‘এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের নেত্রীর নির্দেশে গতকাল আমাদের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম দু’জন হাসপাতালে গেছেন তাদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য। নেত্রী স্পস্টভাবে বলে দিয়েছেন- ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তারা যদি দলীয় পরিচয়ের কেউ হয় তাদের অবশ্যই এ ব্যাপারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রশাসনিকভাবেও এটা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বলা হয়েছে। যারাই অপকর্ম করে থাকুক, এভাবে প্রকাশ্যে এ ধরণের হামলার বিচার হওয়া উচিত। সাংগাঠনিক এবং প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করি। ’
ছাত্রলীগ বার বার খারাপ খবরের শিরোনাম হয়- এ বিষয়ে কাদের বলেন, মাঝে মাঝেই এগুলো হয়, এখানে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে। তারা তো সরাসরি আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত নয়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চেরও কেউ কেউ জড়িত, রিপোর্ট এসেছে।
হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাও আছেন- এ বিষয়ে কাদের বলেন, আগে ছাত্রলীগ করতে পারে। এরমধ্যে একজনের কথা শুনেছি তাকে তার অপকর্মের জন্য ছাত্রলীগ আগেই বহিষ্কার করেছে। বিতর্কিত বলে অনেক আগেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কাজেই বহিষ্কৃত হয়ে গেলে বা দল থেকে চলে গেলে পরে ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের থাকে এমন কোনো বিষয় নয়। ছাত্রলীগের অনেকেই অন্য দলেও গেছে, ছাত্রলীগের প্রভাবশালী নেতারাও অনেকে ভিন্ন ভিন্ন দলে আছেন, থাকতে পারেন- এটাই স্বাভাবিক।
মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে একটা মঞ্চ ব্যবহার করে একটা গোষ্ঠী হামলা চালালো- এ বিষয়ে সড়কমন্ত্রী কাদের বলেন, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কেবিনেটে আমরা পাশপাশি বসি, বিষয়টা শেয়ার করেছি। এ ধরনের নিন্দনীয় ঘটনা যারা ঘটায় তাদের বিষয়টা অবশ্যই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দেখা উচিত, আমি বলেছি।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এ বিষয়ে কাদের বলেন, যেই হোক, যে পরিচয়েই হোক অপকর্মকারীকে আমরা অপকর্মকারী এবং অপরাদিকে অপরাধী এবং দুর্বৃত্তকে দুর্বৃত্ত হিসেবে দেখবো। এখানে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন উঠে না। সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নুরের ওপর এর আগে আটবার হামলা হয়েছে, ব্যবস্থা নেওয়া কতটা বাস্তবায়ন হবে এমন প্রশ্নে বলেন, বাস্তবায়ন হবে কতটা এটা বাস্তবে দেখুন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের মতো দেশে এত মানুষের বাস, রুলিং পার্টিও বিশাল পার্টি। অনেক সময় আমরা নিজেরাও স্বীকার করি, এখানে অনুপ্রবেশকারীও থাকতে পারে এবং অনেক অবাঞ্চিত ঘটনা ঘটায়। কাজেই বিষয়গুলো এখন আমরা খুব সিরিয়াসলি দেখছি।
‘এ ধরনের ঘটনা ঘটলে বিব্রতকর একটা অবস্থা তো সৃষ্টি হয়। আমার কথা হচ্ছে সরকার বিষয়টা কীভাবে দেখছে। সরকার কোনো ঘটনায় নির্বিকার থাকেনি, ব্যবস্থা নিয়েছে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এইচএডি/