এছাড়া তাকে অপসারণের মাধ্যমে দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং সাংগঠনিক গতিশীলতা ও অর্থবহ কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) নগরের একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতাদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল।
সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যখন সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাগারে। নেতাদের উচিত ছিল সব মতের ঊর্ধ্বে উঠে শক্তিশালী একটি সংগঠন গড়ে দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করা। কিন্তু জায়গীরদার আহ্বায়ক হওয়ার পর থেকে সংগঠনের তৃণমূলে বিতর্ক সৃষ্টি করছেন।
তিনি আহ্বায়ক হওয়ার পর পরই প্রথম সভায়ই বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের সিলেট ডেকে আনেন। উপজেলা আহ্বায়ক নির্ধারণকল্পে গোপন ভোটাভুটির পরিবর্তে প্রকাশ্যে ভোটাভুটির করে তৃণমূল পর্যায় গ্রুপিং লাগিয়ে দিয়েছেন। তারপর তিনি ব্যর্থ হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক নির্ধারণ করেন।
উপজেলার নেতারা যখন জেলা বিএনপির আহ্বায়কের সঙ্গে সাংগঠনিক কাজে দেখা করতে আসতেন তখন জেলার আহ্বায়ক সাবেক সভাপতি আবুল কাহের শামীমের বাসায় অথবা সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদের অফিসে বসে সাংগঠনিক কাজকর্ম সম্পাদন করছেন।
নেতারা বলেন, সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির বেশির ভাগ সদস্যই আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা আহ্বায়কের এসব গ্রুপিং কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে কেন্দ্রীয় নেতাকে অবহিত করলে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ এবং চাপের মুখে তিনি শিবগঞ্জে একটি অফিস করলেও মাত্র তিন-চারটি সভা ছাড়া আর কখনও অফিসে বসেননি।
সিলেট জেলা বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের ধারণা, কামরুল হুদা জায়গীরদার জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক সাধারণ সম্পাদকের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। যাতে করে তারা আগামী কাউন্সিলে দলের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েও তাদের নেতৃত্বে পুনর্বহাল করতে পারেন।
বক্তব্যে বলা হয়, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি-সাবেক সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে তাদের গ্রুপের লোক দিয়ে গোপনে ২০ সদস্যের মধ্যে ১৭-১৮ জন সদস্য অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি ঘোষণা করেন। দলের অনেক ত্যাগী ও পরিক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে তাদের অনুগত কমিটি গঠন করা হয়। যাদের অনেকে এখনও ছাত্রদল-যুবদলের সঙ্গে যুক্ত। যাদের আন্দোলন সংগ্রামে কোনো ভূমিকা নেই।
এমনকি অনেকে আওয়ামী লীগের নেতাকে ফুল দিয়ে তাদের সভা সমাবেশে যোগদান করেছেন। শিবির থেকে আসা কিছু কর্মীকেও এসব কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে বলেও বক্তব্যে অভিযোগ করেন বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজমুল হোসেন পুতুল।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এভাবে নিজের ইচ্ছে মতো কমিটি বানিয়ে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করে কাউকে না জানিয়ে জেলা আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদার উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের লোকদের দিয়ে কট্টর গ্রুপিংয়ের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, কমিটি গঠনের পরপরই গত ১ মার্চ উপজেলা ও পৌর আহ্বায়ক কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলা বিএনপির নয় সদস্য।
তিনি অদক্ষ ও অযোগ্য, নগ্ন গ্রুপিংয়ে সংশ্লিষ্ট সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের অপসারণ করে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জকিগঞ্জ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুশ শহীদ মাসুক, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাওছার রশীদ বাহার, বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মুজিবুর রহমান, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক আহমদ, গোয়াইনঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওসমান গণি, গোলাপগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি মশিকুর রহমান মহি, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ, নজমুল আহমদ চেয়ারম্যান, কানাইঘাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আবিদুর রহমান কাউন্সিলর, কানাইঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল হক, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ডিপজল, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২০
এনইউ/আরবি