বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতীকী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য মো. শাহাজালাল, কেন্দ্রীয় কাউন্সিলর মনির হোসেন মলি, হাবিবুর রহমান প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা।
নেতারা বলেন, ‘বাজেটে বরাবরই শ্রমজীবী মানুষের অধিকার উপেক্ষিত হয়েছে। ৬ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান ও শ্রম অধিকার দেখ-ভাল করার দায়িত্ব প্রাপ্ত দু’টি মন্ত্রণালয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল মাত্র ৯০৮ কোটি টাকা, যা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মোট বরাদ্দের মাত্র দুই শতাংশ। করোনা ভাইরাস দুর্যোগ দেখিয়ে দিয়েছে, শ্রমজীবী মানুষ কত অসহায়! কত নিরাপত্তাহীন!’
মানববন্ধণে বলা হয়, ‘দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরাতে শ্রমিকদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসী শ্রমিক ও গার্মেন্টস শ্রমিকরা তাদের রক্ত-ঘামের বিনিময়ে যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছেন, সেটিই ছিল দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান ভিত্তি। অথচ সেই শ্রমজীবী মানুষদের করোনা ভাইরাস দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে রাষ্ট্র পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিতে পারেনি। অসুস্থ শ্রমিকদের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে কারখানায় ডেকে এনে তাদের দায়িত্ব আর নিচ্ছে না রাষ্ট্র। অর্থ পাচারকারীদের রক্ষার নীতিতেই পরিচালিত হচ্ছে দেশ। ’
নেতারা বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করি, শ্রমজীবী মানুষই যে অর্থনীতির চালক, এ সত্যটি রাষ্ট্র উপলব্ধি করবে এবং আগামী বাজেটে ব্যক্তি পর্যায়ে প্রত্যক্ষ করের হার বাড়িয়ে ধনি-দরিদ্রের বৈষম্য কমানো এবং ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়ার পদক্ষেপ নেবে সরকার। ’
মানববন্ধন থেকে যেসব দাবি করা হয়, সেগুলো হচ্ছে- শ্রমজীবী মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য ন্যায্য মূল্যের খাদ্য কার্ড এবং রেশন ব্যবস্থা চালু, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মহীন বিপর্যস্ত শ্রমিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে কমপক্ষে আট হাজার টাকা হারে নগদ সহায়তা দেওয়া, হেলথ কার্ড ও বিমা চালু করে শ্রমজীবীদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, করোনাকালে শ্রমিকের সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেতন-ফি মওকুফ, শ্রমিকদের বাসাভাড়া ও গণপরিবহন ভাড়া সহায়তা স্কিম চালু, শিল্পাঞ্চলে হাসপাতাল ও করোনা ভাইরাস পরীক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা, সংক্রমিত হয়ে কর্মরত অবস্থায় শ্রমিকের মৃত্যুতে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, প্রবাসফেরত শ্রমিকদের কর্মসংস্থান করতে কর্মসৃজন কর্মসূচি নেওয়া এবং পাটশিল্পের আধুনিকায়নে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের জন্য ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২০
আরকেআর/এফএম