তিনি বলেছেন, প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাসা-বাড়ি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘লকডাউন’ করে দেওয়া হচ্ছে। এসব রোগীসহ বাসার অন্য সদস্যদের খাবার, রোগীর চিকিৎসা, প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ, রোগী এবং পরিবারের সদস্যদের কাউনসেলিং, প্রয়োজনে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়াসহ অন্যান্য দায়িত্ব প্রশাসন পালন করছে না।
শনিবার (৬ জুন) দুপুর ১২টায় বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ি রোডস্থ বাসদ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যদিও আমরা দেখেছি, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বরিশালেও অনেক পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, এমনকি মৃত্যুবরণও করেছেন। আমরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পেরেছি, ‘লকডাউন’ পরিবারের প্রয়োজনীয় সেবাদানের বিষয়টি নিয়ে সরকার কোনো নীতিমালা দেয়নি। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে বরিশালে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, সিভিল সার্জন বা পুলিশ প্রশাসন কারা কী দায়িত্ব পালন করবে সেটির কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। অথচ গত ৩০ মে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে ও বাড়ছে লকডাউন করা বাসার সংখ্যা।
তিনি আরও বলেন, আজ যদি সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারিভাবে আমাদের মতো রাজনৈতিক, সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে যুক্ত করে সমন্বিত একটি উদ্যোগ নেওয়া যেতো তাহলে কোনভাবেই এ সংকটগুলো তৈরি হতো না। ভুল নীতির কারণে আজ বরিশালসহ সারাদেশে করোনা আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, যেহেতু সরকারি উদ্যোগে বরিশালে লকডাউন করা বাসাগুলোর খাবার, ওষুধ, চিকিৎসা, কাউনসেলিং, প্রয়োজনে হাসপাতালে রোগী পরিবহনের দায়িত্ব গ্রহণ করা হয়নি, তাই এ অভাবনীয় দুর্দশাগ্রস্ত ওই পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে আজ থেকে আমরা বাসদের পক্ষ থেকে বরিশাল নগরের সব ‘লকডাউন’ পরিবারের খাবার, ওষুধ, চিকিৎসাসহ সব দায়িত্ব আমরা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করলাম।
তিনি বলেন, কাজটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং চ্যালেঞ্জিং জেনেও বরিশালের দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা এ দায়িত্ব কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারি না। বরিশালসহ সারাদেশের মানুষের সমর্থন, সহযোগিতা এবং ভালোবাসায় আমরা এ দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে পারবো। আমরা প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাবো প্রতিদিনের করোনা আক্রান্ত রোগীদের তথ্য দিয়ে এ কাজকে এগিয়ে নিতে আমাদের পাশে থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সীমিত আকারে মানবতার বাজার, মানবতার কৃষি, ফ্রি চিকিৎসা, ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, বিভিন্ন এলাকায় ঘরে ঘরে গিয়ে স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং কার্যক্রম চালু রেখেছি। এছাড়াও দুস্থ শিশুদের পড়াশোনা চালু রাখতে ‘মানবতার পাঠশালা’ চালু করতে যাচ্ছি। আমাদের সব আয়োজন সফল করতে আমারা দেশবাসীর সমর্থন সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
মনীষা চক্রবর্তী বলেন, বরিশালের যে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী বা পরিবার আজ থেকে যে কোনো সময় ০১৫৭২৩১৪০৮৫, ০১৪০৯১৬০০৪২, ০১৭১১২২৭৫১৯ নম্বরে কল করে প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করতে পারবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা বদরুদ্দোজা সৈকত, শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৬ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২০
এমএস/আরআইএস/