ঢাকা: শুধু চিকিৎসা নয়, সকলের জন্য স্বাস্থ্যের অধিকার দাবি করা হয়েছে গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত জনস্বাস্থ্য কনভেনশনে।
শনিবার (২৫ জুলাই) গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে অনলাইনে দিনব্যাপী ‘জনস্বাস্থ্য কনভেনশন ২০২০’-এর ৫টি সেশনে বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তি, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, লেখক, অর্থনীতিবিদ এবং সমাজবিজ্ঞানিসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ৪০ ব্যক্তি আলোচনায় অংশ নেন।
কনভেনশনের উদ্বোধন করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি, মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। লিখিত বক্তব্য উত্থাপন করেন দলটির নির্বাহী সমন্বয়কারী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান রুবেল।
কনভেনশনে বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য ব্যস্থার পুনর্গঠনে প্রয়োজন পরিবেশ, খাদ্য, নগরায়ন, জীবন যাপন, উৎপাদন ও ভোগের ব্যবস্থার পরিবর্তন। মানুষের শরীরকে মুনাফা ও নজরদারির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। একইসাথে রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে। রাষ্ট্রের সুবিধাভোগী অংশ যারা কিনা জনগণের করের টাকায় চলে তাদের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে দেখলে আমরা দেখতে পাব একটা বিপুল দুর্নীতি, সমন্বয়হীনতা, জনগণের স্বাস্থ্যের প্রতি চরম উদাসীনতা, জবাবদিহিতাহীন আমলাতান্ত্রিকতা। বাংলাদেশে যে জবাবদিহিতাহীন ক্ষমতা চর্চা, জনগণের সম্মতিহীন শাসন, পোষ্যদের নানামুখী সুবিধা দিয়ে একটা ডাকাতির ব্যবস্থা চালু রাখা, এগুলোর বাইরে স্বাস্থ্যখাত নয়। বরং এই মহামারিকালে অন্য সকল লুণ্ঠন-দুর্নীতি, ভয়ের শাসন স্বাস্থ্যখাতকে কেন্দ্র করে প্রকাশিত হয়েছে। কাজেই স্বাস্থ্যখাত পুনর্গঠনের আন্দোলন আসলে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তনের সংগ্রামের সাথেই যুক্ত।
কনভেনশন থেকে বলা হয়, স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতি রোধে একটি সাংবিধানিক কমিশন গঠন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, ওষুধ কোম্পানি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে হাসপাতালে ও স্বাস্থ্যসেবা দানকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মুনাফার লাগাম টেনে ধরার প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত কনভেনশনে বক্তারা আরও বলেন, একটা গণতান্ত্রিক, জনগণের স্বার্থে পরিচালিত ও অধিকার রক্ষায় সক্ষম রাষ্ট্রই পারে একটা গণমুখী, দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে। ফলে স্বাস্থ্যখাতের পুনর্গঠনের জন্য আমাদের এই আন্দোলনকেও সেই লক্ষ্যেই পরিচালিত করতে হবে। এই পরিবর্তনের চাহিদা এখন জনগণের কাছে আগের যেকোন সময়ের চাইতে মূর্তরূপে হাজির হয়েছে। জনগণের এই চাহিদায় সাড়া দিয়ে রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে এখন আরও শক্তিশালীভাবে এই সংগ্রামে হাজির হতে হবে, জনগণকে সংগঠিত করতে হবে, জনগণের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে মনোযোগী হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০২০
আরকেআর/এমজেএফ