ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকারের লক্ষ্য মেগা প্রজেক্ট, মেগা লুট: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০
সরকারের লক্ষ্য মেগা প্রজেক্ট, মেগা লুট: মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকারের লক্ষ্য একটাই— টাকা বানাও, দুর্নীতি করো, মেগা প্রজেক্ট করো, মেগা লুট করো। বাংলাদেশ ব্যাংক হ্যাকড হয়ে গেলো, প্রায় ৮শ’ মিলিয়ন গেলো, কী হয়েছে?

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এম সাইফুর রহমান স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতি একদম নিচের দিকে যাচ্ছে, মানে ডাউন ওয়ার্ডস। আমি ছোট একটা ঘটনা বলতে চাই, তখন আওয়ামী লীগের আমল, বাকশালের আগে আগে, যখন শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি। সেই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. মোজাহেরুল হক। তিনি প্রধান অতিথি শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবকে সামনে রেখে বলে্ছিলেন যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি তীব্র গতিতে রসাতলে যাচ্ছে। আজকে আবার সেই কথা বলতে হয়— যে অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপরে দাঁড় করিয়ে জিয়াউর রহমান ও সাইফুর রহমান উপরে নিয়ে গিয়েছেন। সেটাকে এখন টেনে নিচের দিকে, ওই রসাতলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেটা হচ্ছে আজকের অনির্বাচিত সরকারের নেতৃত্বে। আজকে পরিকল্পিভাবে দেশের অর্থনীতি আবার রসাতলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের স্টক মার্কেট থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে নিয়ে চলে গেল। বড় বড় প্রতিবেদন আসলো সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারলেন না আগের অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব। বললেন, এদের হাত অনেক লম্বা- নাম বলা যাচ্ছে না। ব্যাংকগুলো একটার পর একটা লোপাট, সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা, চার হাজার কোটি টাকা, পাঁচ হাজার কোটি টাকা..। এমনকি ওই সময়ে সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব বললেন, সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা এমন কোনো টাকা নয়।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আজকে দেখুন একজন ব্যাংকের চেয়ারম্যান তিনি জনতার মঞ্চের নেতা ছিলেন, একটা নতুন ব্যাংকও তৈরি করেছিলেন, কয়েকদিন আগে দেখলাম যে, সেই ব্যাংকের এমডি কারাগারে। সেই ব্যাংক থেকে তিনি এর মধ্যেও ২ হাজার কোটি টাকা নিয়েছেন। এই সমস্ত ঘটনা ঘটছে। আজকে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে রসাতলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এম সাইফুর রহমানকে ‘বিপ্লবী সংস্কারক’ হিসেবে অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, বলা যেতে পারে তিনি একজন বিপ্লবী সংস্কারক ছিলেন। অনেক সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন যেটা খুব পপুলার ছিল না। যে ভ্যাট ইন্ট্রোডিউস করেছিলেন–এটা কিন্তু ওই সময় পপুলার ঘটনা ছিল না। অনেক অর্থনীতিবিদও ওই সময়ে এর সমালোচনা করেছিলেন। এমনকি আমি বিখ্যাত পত্রিকা হলিডেতে হেডলাইন দেখেছি- রেমাইনড ম্যান ডেস্ট্রয়েড অর্থাৎ সাইফুর রহমান একাই ধবংস করে দিচ্ছেন। কিন্তু তার ভবিষ্যত দৃষ্টি ও প্রজ্ঞা-মেধা প্রমাণ করেছে তিনি ডেস্ট্রয় করেননি, তিনি নির্মাণ করেছেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও সাবেক যুবদল নেতা কাইয়ুম চৌধুরীর পরিচালনায় এই ভার্চ্যুয়াল আলোচনাসভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সি্লেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌর সভার চেয়ারম্যান জি কে গউছ, যুক্তরাজ্য বিএনপি শাখার সভাপতি এম এ মালেক এবং প্রয়াত নেতা সাইফুর রহমানের ছেলে সাবেক এমপি এম নাসের রহমান বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ২০০৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে সংসদে ১২ বার বাজেট উপস্থাপন করেন। তিনি অর্থমন্ত্রী ছাড়া বাণিজ্য ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২০
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।