ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সিলেট জেলা আ. লীগে ত্যাগিদের পদোন্নতি

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
সিলেট জেলা আ. লীগে ত্যাগিদের পদোন্নতি

সিলেট: রাজনীতিতে বেশি সক্রিয় না হলেও আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। জেলা আওয়ামী লীগের বিগত দুই কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন তিনি।

এবারও জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তাকে পদোন্নতি দিয়ে সহসভাপতি পদে রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে এভাবে সাবেক কমিটির অধিকাংশ নেতারই পদোন্নতি হয়েছে।

এছাড়া মৃত্যু ও প্রবাসে অবস্থানের জন্য শূণ্য পদসহ কয়েকটি সম্পাদকীয় ও সদস্য পদে রাখা হয়েছে একঝাঁক নতুন মুখ, যারা রাজপথের পরীক্ষিতকর্মী, দীর্ঘদিন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ সারির নেতা ছিলেন। সব মিলিয়ে প্রবীণ ও নবীনের সমন্বয়ে করা প্রস্তাবিত কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়নের পাশাপাশি সবাইকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও প্রস্তাবিত কমিটিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন দু'/চারজন।

সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের পদোন্নতির পর্ব শুরু হয় গত ৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে। জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের মধ্য থেকে দু'জনকে বেছে নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন সমঝোতার মাধ্যমে জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমানকে সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মূল্যায়নের মাধ্যমে পদোন্নতির সেই ধারাবাহিকতা লক্ষ্য করা গেছে গত ১৪ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় দফতরে জমা পড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে। কমিটির একটি তালিকা বাংলানিউজও সংগ্রহ করেছে।

প্রস্তাবিত কমিটি ও সাবেক কমিটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সভাপতি মণ্ডলী ও সম্পাদকীয় পদগুলোতে পূর্বের কমিটির অধিকাংশ নেতাকেই পদোন্নতির মাধ্যমে স্থান করে দেওয়া হয়েছে। সভাপতিমণ্ডলীতে একটি ও সম্পাদীয় পদে ৪ জন নতুন মুখ রাখা হয়েছে।

কাউন্সিলে ঘোষিত সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান ছাড়াও প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে প্রথম সহসভাপতি রাখা হয়েছে কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলে সভাপতি প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। দ্বিতীয় সভাপতি পদে সাবেক কমিটির ৪ নং সহসভাপতি মাহমুদ-উস-সামাদ চৌধুরী কয়েস এমপি,  এছাড়া সহসভাপতি পদে সাবেক কমিটির ৬ নং সহসভাপতি আশফাক আহমদ, সাবেক কমিটির ৯নং সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ ফরিদ আহম্মদ, সাবেক কমিটির প্রথম যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, সাবেক কমিটির দ্বিতীয় যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক সুজাত আলী রফিক, সাবেক কমিটির কোষাধ্যক্ষ ড. তৌফিক রহমান, নতুন মুখ হিসেবে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আহমদ আল কবির, সাবেক কমিটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ উদ্দিন আহমদ, সাবেক কমিটির দ্বিতীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মশাহিদ আলী ও সাবেক কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত জেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফতেখার হোসেন শামীমপত্নী নাজনীন হোসেনকে রাখা হয়েছে।

প্রথম যুগ্ম সম্পাদক পদে আছেন আগের কমিটির প্রথম সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম কামাল। অন্য দুই যুগ্ম সম্পাদক পদে যথাক্রমে সাবেক কমিটির তৃতীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলী দুলাল ও সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কবির উদ্দিন আহমদকে রাখা হয়েছে।

সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে স্থান পেয়েছেন যথাক্রমে সাবেক কমিটির প্রচার সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান, সাবেক দফতর সম্পাদক সাইফুল আলম রুহেল এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক অ্যাডভোকেট রঞ্জিত সরকার।

দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ পর কোষাধ্যক্ষ পদ পরিবর্তন হয়েছে। এ পদে রাখা হয়েছে সাবেক নারী সাংসদ সৈয়দ জেবুন্নেছা তনয় শমসের জামালকে। তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে বহাল রাখা হয়েছে অ্যাডভোকেট খোকন কুমার দত্তকে।

আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট আজমল আলী, দফতর সম্পাদক পদে সাবেক উপদফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক পদে সাবেক যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আব্বাস উদ্দিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক পদে সাবেক কমিটির সদস্য শামসুন্নাহার মিনু, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কবির উদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ইমান উদ্দিন মানিক, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক পদে সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার হোসেন পিয়ার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে সংস্কৃতিকর্মী শামসুল আলম সেলিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক পদে নতুন মুথ ডা. শাকির আহমদ শাহীনকে রাখা হয়েছে।

এছাড়া সম্পাদকীয় পদে রাখা হয়েছে সাবেক শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক মুস্তাক আহমদ পলাশ, জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক এজাজ, জেলা পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান মতিকে।  

প্রথম সদস্য পদ পেয়েছেন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

এছাড়া সদস্য পদে সাবেক সদস্য জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সদস্য সিবিএন নেতা নুরুল আমিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, সাবেক সদস্য লুৎফুর রহমান, মফিজুর রহমান বাদশা, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইব্রাহিম আলী, জৈন্তাপুর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সদস্য আবদুল হাসিব মনিয়া, অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিরাজী, সাবেক যুবলীগ নেতা আবদুল বারী, সাবেক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ও বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম নুনু, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক সদস্য আবদুল মুমিন চৌধুরী, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক সদস্য আবু জাহিদ, সাবেক সদস্য সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন ও সাবেক সদস্য আবদাল মিয়াকে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
এনইউ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।