ফরিদপুর: ফরিদপুরের আলোচিত দুই ভাই সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌরসভার কাউন্সিলর শেখ মো. জলিলকে (৪৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি ফরিদপুর পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাত নম্বর ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর। আগামী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ফরিদপুর পৌরসভার নির্বাচনে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মো. জলিল।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরশেদ আলম বাংলানিউজকে বলেন, সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের নামে দায়ের করা মানি লন্ডারিং মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকার চাহিদা অনুযায়ী ওই মামলার আসামি হিসেবে জলিলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলেই জলিলকে জেলার মূখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পরে সিআইডি ঢাকা, তাকে ফরিদপুর কারাগার থেকে তাদের হেফাজতে নেবে।
জলিলের বিরুদ্ধে টেপাখোলা গরু হাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় আরও একটি মামলা রয়েছে। তবে ওই মামলায় তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জমি দখল ও রেলওয়ের জমি দখল করে নিজে ব্যবহার ও ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
গত ২৬ জুন সিআইডির পরিদর্শক এসএম মিরাজ আল-মাহমুদ বাদী হয়ে ঢাকার কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনে বরকত ও রুবেলের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন।
এই মামলায় ওই দুই ভায়ের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী ২০১৫ এর ৪(২) ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলাটি তদন্ত করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পশ্চিম বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি ঢাকার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) উত্তম কুমার বিশ্বাস।
উত্তম কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, বরকত ও রুবলেসহ মানি লন্ডারিং মামলায় এ পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মামলার আসামি হিসেবে ফরিদপুরে শেখ মো. জলিলকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানা পুলিশ। তাকে আগামী রোববার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলায় ‘শ্যোন এরেস্ট’ দেখানো হবে। জলিলকে নিয়ে এ মামলায় গ্রেফতারের সংখ্যা হল ১১ জন।
দুই ভাইয়ের মধ্যে সাজ্জাদ হোসেন বরকত ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সধারণ সম্পাদক এবং তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেল ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন। গত ৭ জুন তাদের গ্রেফতার করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে হামালার আসামি হিসেবে। এ গ্রেফতারের পর শহর আওয়ামী লীগ ও ফরিদপুর প্রেসক্লাব থেকে বহিস্কৃত হন দুই ভাই।
গত ১৬ মে রাতে ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার মোল্লাবাড়ী সড়কে অবস্থিত সুবল চন্দ্র সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ১৮ মে সুবল চন্দ্র সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২০
এসআরএস