ঢাকা: মূর্তি পূজা করতে মানা আছে, তবে মূর্তি ভাঙার কথা কোরআনের কোথাও বলা নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শনিবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেজর হায়দার বীরউত্তম মিলনায়তনে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর ১৪০তম জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মাওলানা ভাসানী ছাড়া মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পূর্ণভাবে অসম্পূর্ণ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অবশ্যই দুজনকে আনতে হবে, একজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আরেকজন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী। এই দুজনের দুধরনের চরিত্র। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। তার নামে স্লোগান হয়েছে, তার নামে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে। অন্যদিকে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সশরীরে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় ছিলেন।
কোনো দলের নাম উল্লেখ না করেই গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি বলেন, মাওলানা ভাসানীকে তারা কীভাবে নির্যাতন করেছিল সে ইতিহাস অনেক কম বয়সীদের অজানা। মাওলানা সাহেব যখন বুঝতে পারলেন এদের সঙ্গে থাকা যাবে না, তখন তিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত দল আওয়ামী লীগ ছেড়ে নতুন দল গঠন করলেন। সদরঘাটে রূপমহল সিনেমা হলের একটি মিটিংয়ে আজকে যারা দেশ শাসন করছে তাদের পূর্বসূরিরা মাওলানা ভাসানীকেও আক্রমণ করেছিল। তারা তাদের জন্মদাতা পিতাকে আক্রমণ করেছিল। তাদের উচিত ছিল আজকে সরকারিভাবে মাওলানা ভাসানীর জন্মদিন পালন করা। আজকের পত্রিকায় মওলানা ভাসানীর ছোট্ট একটি খবর ছাড়া আর কিছুই নেই। কারণ তারা মওলানা ভাসানীকে ভয় পায়।
ভাস্কর্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্য করে ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশের মৌলভী এবং আলেমরা ভাস্কর্য আর মূর্তি নিয়ে আন্দোলন করছেন। আমি আরবিতে স্কলার না, তবে আমি কোরআনের বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ পড়েছি, মূর্তি পূজা করতে মানা আছে, তবে মূর্তি ভাঙার কথা কোরআনের কোথাও বলা নেই। মূর্তি ভাঙতে হলেতো প্রতিটা গির্জাকে ভেঙে ফেলতে হবে, কারণ গির্জায় যীশু খ্রীস্টের মূর্তি রয়েছে। মূর্তি বা ভাস্কর্য এসব বিষয় নিয়ে আন্দোলন না করে জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন, ন্যায়-নীতির আন্দোলনে আসেন।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর। পরিচালনা করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আকতার হোসেন।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গনসংহতি আন্দোলনের জুলহাসনাইন বাবু, আবুল হাসান রুবেল, ঢাকসু ভিপি নুরুল হক নুর, রাষ্ট্র চিন্তার অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, দিদারুল ইসলাম ভুঁইয়া, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহবায়ক রাশেদ খান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২০
আরকেআর/এইচএডি