ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথিবী থেকে দেশকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য বহির্বিশ্বের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধের দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মির্জা ফখরুলের বক্তব্যে মনে হচ্ছে তিনি একজন প্যানডেমিক বিশেষজ্ঞ— এমন মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন ড. হাছান মাহমুদ।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। তিনি সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল) আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য বলেছেন। প্রকৃত পক্ষে করোনা মহামারির মধ্যে পৃথিবীর কোনো দেশ আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি। এমনকি ইউকেতে করোনার নতুন ভার্সন যেটি অনেক বেশি কন্টেনশাস, সেটি দেখা দেওয়ার পর আশপাশের দেশগুলো বিমান ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করেছে, তখন ইইউ’র পক্ষ থেকে গতকাল আহ্বান জানানো হয়েছে সেটি না করার জন্য এবং যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করার জন্য। এই প্রেক্ষাপটে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলছেন, দেশকে পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যে মনে হচ্ছে প্যানডেমিক নিয়ে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি এমনভাবে পরামর্শ দিলেন, কী কী বন্ধ করতে হবে, আর বাংলাদেশ সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ। ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব, তিনি তো শিক্ষিত মানুষ। আমি সবিনয়ে তাকে অনুরোধ করব, আশেপাশের দেশগুলোতে করোনায় কী পরিমাণ মৃত্যু বা করোনা শনাক্তের হার কতটুকু সেটি একটু বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য।
লকডাউন দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা— এটার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আগেও কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। সরকারি ছুটি দেওয়া হয়েছিল, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অনেক কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। এখনও স্কুল-কলেজ বন্ধ আছে, অনেক কিছু বন্ধ আছে।
লকডাউন না দিয়ে ছুটি দেওয়া কিংবা কাজকর্ম কমিয়ে দেওয়া— এমন কোনো পরিকল্পনা সরকারের আছে কিনা জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, আমার মনে হয় প্রয়োজনের নিরিখে বিভিন্ন সংস্থা তো সেই ব্যবস্থা নিতেই পারে। সংস্থা-প্রতিষ্ঠান তো নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, গতকাল বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের হার ছিল গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। শীতকালে করোনা বাড়বে এটা আগেই থেকেই সরকার সতর্ক করেছিল, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো থেকে জনগণকে সচেতন করা হয়েছিল। একই সঙ্গে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এতে দেখা যাচ্ছে, আমরা যতটুকু আশঙ্কা করেছিলাম করোনা বৃদ্ধির, ঠিক সেভাবে এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে হয়নি। সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে আশেপাশের দেশগুলো থেকে অনেক বেটার পজিশনে আছে।
করোনার সাড়ে ৯ মাস পার হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা জনগণের পাশে দাঁড়াননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ কমিটির পক্ষ থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মানুষের কাছে মাস্ক, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এক কোটি ২০/২৫ লাখ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা শুরু হওয়ার পর তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা অনেক আশঙ্কার কথা বলেছিলেন, দেশে রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে, হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে না রোগী। কার্যত আল্লাহর রহমতে সেটি হয়নি। তাদের শঙ্কা-আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
জিসিজি/এমজেএফ