ঢাকা: আওয়ামী লীগের বর্তমান সরকারের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান তুলে ধরাকে স্বাগত জানিয়েছেন ১৪ দলের নেতারা। সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দুর্নীতির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কঠোরভাবে দমন করার ওপর গুরুত্ব দেন ১৪ দলের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে উন্নয়ন অগ্রযাত্রার গুরুতর প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দুর্নীতিকে চিহ্নিত করায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক নেতারা তাকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ভাষণে বলেন, উন্নয়নের পথে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমরা বদ্ধপরিকর। কিছু অসাধু মানুষ নানা কৌশলে জনগণের সম্পদ কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং হবে না।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের উত্থান প্রতিহত করেছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের তাৎক্ষণিক প্রক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে ১৪ দলের নেতারা বলেন, উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে দুর্নীতি এবং সাম্প্রদায়িকতাকে ধ্বংস করতে হবে। এই দুটি বাধা সরকারের উন্নয়নের অন্তরায়। এ দুটোকে দুর করা এখন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জকে অবশ্যই অতিক্রম করতে হবে। দুর্নীতি এবং সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে আপোষের কোনো সুযোগ নেই।
১৪ দলের নেতারা আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তো সরকারকে অবশ্যই কঠোর অবস্থান নিতে হবে। কিন্তু এত দিন কেন দুর্নীতি হলো, এত দুর্নীতি কিভাবে হলো তার একটা রাজনৈতিক জবাবদিহিতাও থাকা উচিত। সরকার ১২ বছর অতিবাহিত করেছে। এর বিরুদ্ধে আগে থেকে যদি ব্যবস্থা নেয়া হতো তবে এই অবস্থা তৈরি হতো না।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে তারা ইতিবাচক উল্লেখ করে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী যে অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তা ইতিবাচক। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার যদি যথাযথ প্রয়োগ না থাকে তবে মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি হবে না। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা বাস্তবায়নে সরকাকে তা যথাযথভাবে প্রয়োগের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাসদের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের মূর্লে ছিল বিস্ময়কর উন্নয়ন অগ্রযাত্রা। এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রার প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দুর্নীতিকে তিনি চিহ্নিত করেছেন, এ জন্য প্রধানন্ত্রীকে ধন্যবাদ। দুর্নীতির ঘর কাটা ইদুঁর উন্নয়নের সব ফসল ঘরে তুলতে দিচ্ছে না। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা এই অগ্রযাত্রাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। এই দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতাকে কঠোর হাতে দমন করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে হবে। দুর্নীতি ও সাম্প্রদায়িকতার সঙ্গে আপোষ করার কোনো সুযোগ নেই। এই দুইটি বাধা দুর করা এখন সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া বাংলানিউজকে বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তো অবশ্যই সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু এত দিন যে দুর্নীতি হলো এর জন্য তো সরকারের দায় আছে। কেন দুর্নীতি হলো, কিভাবে হলো এর জন্য একটা রাজনৈতিক কৈফিয়ত থাকা দরকার।
এ বিষয়ে ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে ঘোষণা দিয়েছেন তার প্রয়োগ যথাযথভাবে করতে হবে। যথাযথ প্রয়োগ না হলে মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে না। সরকার যদি আগে থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো তাহলে সবাই সতর্ক হতো, এই অবস্থা হতো না।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৮ ঘন্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২১
এসকে/এমএমএস