ঢাকা: ডা. মুরাদকে সরকার নির্বিঘ্নে যেতে দিলেও কানাডা সভ্য দেশ হওয়ায় তাকে ঢুকতে দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। শনিবার (১১ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ ও অশ্লীল বক্তব্য দেওয়ার প্রতিবাদে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ডা. মুরাদ হাসানকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, একটা চিকিৎসক নামের কলঙ্ক একজন প্রতিমন্ত্রী যেসব নারী বিদ্বেষী, জঘন্য ও অশ্রাব্য কথা বলেছেন তাতে সারা দেশের মানুষ তার বিরুদ্ধে সোচ্চার। তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কিছু কিছু মানুষের সমর্থন পেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা বুঝেছিলাম এটা এক ধরনের আই ওয়াশ এবং তা প্রমাণ হয়েছে। তিনি টিকিট কাটছেন- পত্রিকা, অনলাইনে এসেছে। তিনি এয়ারপোর্টে গেছেন ব্রেকিং নিউজ হয়েছে। কিন্তু তার পরও নির্বিঘ্নে তিনি বিদেশে চলে গেছেন। যদিও তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর চেয়ে অনেক কম অপরাধে বিরোধী দলের অনেক নেতাকে আপনারা কারাগারে আবদ্ধ করেছেন। বিনা বিচারে আটক রেখেছেন।
তিনি বলেন, তাকে (ডা. মুরাদ) আপনি যেতে দিয়েছেন, আপনারা যেতে দিয়েছেন। কিন্তু কানাডা একটা সভ্য দেশ, তারা একটা অসভ্য লোককে ঢুকতে দেয়নি। লজ্জা হওয়া উচিত আপনাদের। কিন্তু আমরা জানি আপনারা লজ্জিত হন না। কারণ জনগণের ভোট ছাড়া ক্ষমতায় বসে যদি লজ্জা না পান, তাহলে আর কীসে লজ্জা পাবেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার যে বয়স ও রোগের ধরণ তাতে তার এদেশে চিকিৎসা সম্ভব নয় এটা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন। কিন্তু সরকার আইনের নামে তাদের প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাকে বাইরে যেতে দিচ্ছে না। বিলম্ব ঘটলে হয়তো আর চিকিৎসার সুযোগ নাও পাওয়া যেতে পারে। এই বাস্তবতা জানা সত্ত্বেও সরকার যখন তাকে বাইরে যাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না, তখনতো সঙ্গতভাবেই একথা বলা যায়, সরকার চাইছে না তার উপযুক্ত চিকিৎসা হোক এবং তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশনেত্রী আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে জনগণের ক্ষোভ নিরসনের ক্ষমতা আমাদেরতো নেইই, সরকার বাহাদুর আপনাদেরও নেই। ইতোমধ্যে আপনারা বিশ্বে মর্যাদা হারিয়েছেন। আজকে আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক সম্মেলনে আপনাদের দাওয়াত করা হয় না। কারণ তারা মনে করে আপনারা গণতান্ত্রিক নন। আজকে যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের বিশিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সরকারের লজ্জিত হওয়া উচিত। আমরা লজ্জিত।
চিরদিন কেউ ক্ষমতায় থাকবে না উল্লেখ করে এ বিএনপি নেতা বলেন, যত অপরাধ, যত পাপ আপনারা করেছেন, ৭২ থেকে ৭৫ সালেও এত খারাপ হয়নি অবস্থা। এত অত্যাচার নিপীড়ণ হয়নি। এত অনাচার, দুর্নীতি হয়নি। কিন্তু তারপরও আপনাদের ক্ষমতায় ফিরে আসতে ২১বছর লেগেছিল। এবার ২১০০ বছর লাগবে কীনা ভাবুন।
ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-আল রশিদের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা সাংবাকি ইউনিয়ন (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, আবেদ রাজা, ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. আব্দুস সেলিম, সহ-সভাপতি ডা. শহীদ হাসান, ডা. সিরাজ, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ডা. মেহেদী হাসান, যুগ্ম-মহাসচিব ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড