ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

জনসমাবেশে মানুষের অংশগ্রহণ অভ্যুত্থানের মতোই: মান্না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২২
জনসমাবেশে মানুষের অংশগ্রহণ অভ্যুত্থানের মতোই: মান্না

ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, মানুষ যেভাবে সব জনসমাবেশে অংশ নিচ্ছে তা অভ্যুত্থানের মতোই। সবকিছু বন্ধ, তারপরও মানুষ যাচ্ছে।

খেয়াল করলে দেখতে পাবেন এরা সবাই বিএনপির সমর্থক তা নয়। এখানে সাধারণ মানুষও আছেন, যারা মনে করেন জিনিসের দাম কমা দরকার।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে ৫০তম সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘সংবিধান সংস্কার কেন প্রয়োজন এবং কীভাবে সম্ভব’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এই ডাকসু নেতা বলেন, মানুষ ক্ষমতাসীনদের অত্যাচারের জর্জরিত, দ্রব্যমূল্যের আঘাতে বিপর্যস্ত। ফলে যাকে পাচ্ছে তাকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছে। কারণ তাদের তো বাঁচতে হবে।

গণতন্ত্র মঞ্চ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে জানিয়ে তিন বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের যে বইগুলো আছে, সেগুলো নিশ্চয় পড়ে দেখেছেন। যেগুলো যেগুলো বলেছি, তার ভিত্তিতে থাকতে চাই, লড়াইটা করতে চাই। লাগাতারভাবে এই কথাগুলো বলতে চাই। সেই কারণে বলব জনগণের ভাষায় কথা বলতে হবে। যেন মানুষ মনে করবে মুক্তি এরাই (গণতন্ত্র মঞ্চ) দিতে পারে, ওরা (অনান্য রাজনৈতিক দল) যতই বড় দল হোক, যতই বড় বড় কথা বলুক, ওদের দিয়ে হবে না। হলে এদের দিয়েই হবে।

সংবিধানে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন উল্লেখ করে মান্না বলেন, সংবিধান পরিবর্তন করতে হলে জেনে, বুঝে ধীরে আগাতে হবে। এই সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীকে জারের মতো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ লোকই সংবিধানের ধারা সম্পর্কে জানে না। সংবিধানের ৭ ধারা থাকলে এই সরকারের বিরুদ্ধে কোথাও কিছু বলা যাবে না। ৭ ধারা থাকলে মানুষের অধিকার থাকবে না। সুতরাং মানুষকে সংবিধান সম্পর্কে সহজ করে বলতে হবে, যাতে মানুষ বিশ্বাস করে এই সংবিধান পরিবর্তন করা দরকার।

তিনি বলেন, মানুষকে দ্রব্য মূল্যের দাম বেশি রাখা হচ্ছে, এরা চোর বলে আনতে পারবেন। কিন্তু তাদের অধিকার আদায় হচ্ছে না, সংবিধান বদলানো দরকার- তারা সেটা বুঝবে না।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান ইংরেজিতে তৈরি করা হয়েছিল। পরে প্রফেসর আনিসুজ্জামানদের এটা অনুবাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংবিধানের যে স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো, প্রধানমন্ত্রীকে কেন্দ্র করেই তৈরি করা হয়েছে। সংবিধান নিয়ে প্রধান আপত্তিটা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর জবাবদিহিতার কোনো বিধান নেই। একজন নাগরিক হিসেবে প্রশ্ন করার কোনো সুযোগ নেই। তা নেই বলে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) বললেন, বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠাবেন। কী নির্মম সত্যি তিনি অবলীলায় উচ্চারণ করলেন! জাতীয় পার্টিকে (জাপা) নিয়েও সরকার খেলাধুলা করছে। এই যে চাপ, ব্ল্যাকমেইলিংয়ের রাজনীতি সংবিধান পরিবর্তন ছাড়া এটি পরিবর্তন সম্ভব নয়। বাংলাদেশে একজন মাত্র লোক স্বাধীন, তিনি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপতিরও কোনো স্বাধীনতা নেই।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক অ্যাড. হাসনাত কাইয়ুম বলেন, সংবিধান নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন ৭২ সাল থেকে তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। এর মধ্যে যতটুকু যৌক্তিক, আমরা নিজেদের মধ্যে ধারণ করেছি। আমরা মনে করি এখানে যারা আছি, যারা নেই তারা কেউ হয়ত ৭টা, ৫টা, ২টা জায়গায় সংস্কার করার কথা বলি। আমরা সংস্কারের পথটা যদি ঠিক করে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারি, তাহলে অতি দ্রুত দেশের প্রেক্ষাপট পালটে যাবে। দেশের মানুষ আজ এই পরিবর্তনের দিকে তাকিয়ে আছে৷

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতা এলো, দেখা গেল শাসকরা সেটার উপযোগী রাষ্ট্র ব্যবস্থা করার ব্যাপারে আগ্রহী নন। প্রচণ্ড এক স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে রয়ে গেছে। সংবিধান প্রণয়নের মূল দৃষ্টিভঙ্গি দেখলে মনে হবে একটা দল তাদের কাছে চিরদিন ক্ষমতা রাখতে হবে, তারাই চিরদিন দেশ চালিয়ে যাবে।

আলোচনা সভায় গণতন্ত্র মঞ্চের বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২২
এমকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।