ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিট ১৪.৯৯ টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১২
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ প্রতি ইউনিট ১৪.৯৯ টাকা

ঢাকা: নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাম বিভিন্ন শ্রেণিতে ১৩ টাকা ৮৮ পয়সা থেকে ১৪ টাকা ৯৯ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে প্রথম বারের মতো এমন একটি শ্রেণিতে (কোয়ালিটি বা মানসম্মত শ্রেণি) বিদ্যুৎ সরবরার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।



১৩২ কেভিতে ১৩ টাকা ৮৮ পয়সা, ৩৩ কেভিতে ১৪ টাকা ৪৫ পয়সা, ১১ কেভিতে ১৪ টাকা ৯৯ পয়সা দর নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১ জুন সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। নতুন এই শ্রেণীতে শ্রমঘণ ও রপ্তানীমুখী শিল্পকে অনুমোদন করা হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন এই দাম নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন।

বর্তমানে শিল্পে ১১ কেভিতে পিক সময়ে ৮ টাকা ০৮ ও অফ-পিকে ৫ টাকা ১৬ পয়সা দরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে সরকার। কিউ শ্রেণীতে অন্তভূক্ত হলে সেই গ্রাহককে প্রতি ইউনিটের জন্য বাড়তি টাকা গুণতে হবে প্রায় ৭ টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি মাসে ৪০০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৪৫ টাকা ডিমান্ড চার্জ দিতে হবে।

৩৩ কেভি গ্রাহককে বতর্মানে ৫ টাকা ০৮ পয়সা থেকে ৭ টাকা ৯১ পয়সা পরিশোধ করতে হচ্ছে। এই শ্রেণীর গ্রাহক কিউ শ্রেণীতে অন্তভুক্ত হলে তাকে প্রতি ইউনিটের জন্য বাড়তি মাসুল দিতে হবে প্রায় সাড়ে ৬ টাকা। ৪৫০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৪০ টাকা ডিমান্ড চার্জ দিতে হবে।

১৩২ কেভি লাইনের গ্রাহকদের বতর্মানে পিক সময়ে ৭ টাকা ৫১ পয়সা ও অফ-পিকে ৪ টাকা ৮২ পয়সা দরে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। নতুন শ্রেণীতে তাদেরকে প্রায় সাড়ে ৬ টাকা বাড়তি দিতে হবে। ৫০০ টাকা সার্ভিস চার্জ এবং ৪০ টাকা ডিমান্ড চার্জ ধরা হয়েছে।
চেয়ারম্যান বলেন, এটা গতানুগতিক মূল্যবৃদ্ধি নয়। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড গত তিন বছর ধরে কিউ শ্রেণিতে (মানসম্মত শ্রেণি) বিদ্যুতের আলাদা গ্রাহক সৃষ্টির মাধ্যমে আলাদা দাম নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল।

পিডিবির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি। এজন্য প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অলস পড়ে আছে। এই তরল জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ (মানসম্মত ও নিরবচ্ছিন্ন) যদি আগ্রহী গ্রাহকদের সরবরাহ করা যায় তাহলে পিডিবির রাজস্ব বাড়বে।

তিনি জানান, ‘মানসম্মত বা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ফলে সাধারণ গ্রাহকদের কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলে পিডিবির আমাদের জানিয়েছে। ’

উল্লেখ্য, গত ২ মে এ বিষয়ে গণশুনানি হয়। এর আদেশ ১৩ মে দেওয়ার কথা থাকলেও আঞ্চলিক এনার্জি সেমিনারের কারণে সময় পিছিয়ে করা হয় ২১ মে। পরে বিইআরসি চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় আবারও সময় পরিবতর্ন করা হয়।

পিডিবির যে প্রস্তাব দিয়েছিলো তাতে তারা উল্লেখ করে, হাইড্রো ফার্নেস অয়েলভিত্তিক কাটাখালি ৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট, হরিপুর বিএমপিপি ১১০ মেগাওয়াট, মেঘনাঘাট ১০০ মেগাওয়াট, সিদ্ধিরগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল, নওয়াপাড়া ৪০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল, কেরানীগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল ও খুলনা ১১৫ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল পাওয়া প্ল্যান্ট ৭০ শতাংশ হারে চালানো হবে।

এই আটটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ৭০ শতাংশ হারে পরিচালনা করলে ৫০০ মেগাওয়াট বাড়তি বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এতে করে শিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে বতর্মানে শিল্পে সরবরাহ করা বিদ্যুৎ অন্য গ্রাহকদের সরবরাহ করা হলে লোডশেডিং কমবে।

পিডিবি আবাসিকে প্রতি ইউনিট ১৩ দশমিক ১৫ টাকা, শিল্পে ১৬ দশমিক ৭৩ টাকা (১৩২ কেভি লাইন), ১৭ দশমিক ৫২ টাকা (২২ কেভি লাইন) ও ১৮ দশমিক ২৩ টাকা (১১ কেভি লাইন) মূল্য নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেছে।

পিডিবি উল্লেখ করেছে, তাদের উল্লিখিত আটটি কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে জ্বালানি, সঞ্চালন ও অন্যান্য মিলে প্রতি ইউনিটে গড় খরচ পড়বে ১৫ দশমিক ৯৬ টাকা।

কিউ শ্রেণির গ্রাহক হতে হলে বিদ্যুৎ লাইন, সাব স্টেশন স্থাপনসহ অবকাঠামো উন্নয়নের খরচ গ্রাহককে বহন করতে হবে। যে কেউ চাইলে গ্রাহক হতে পারবে। তবে কাউকে বাধ্য করা যবে না। এছাড়া একই সঙ্গে দুই শ্রেণির গ্রাহক থাকা যাবে না। যে কোনো একটি গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১২
ইএস/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজ রুম এডিটর, রানা রায়হান, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর;
জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর  
[email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।