ঢাকা : পেট্রোবাংলা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল নির্মাণ দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা চতুর্থবারের মতো বৃদ্ধি করেছে পেট্রোবাংলা। এ দফায় ৩১ মে থেকে ১০ দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বুধবার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা একটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা ৩১ মে থেকে ১০ দিন সময় বৃদ্ধি করা হয়।
পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বাংলানিউজকে জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস অ্যাস্ট্রা ওয়েল অ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জি এর সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের সিঅ্যান্ডটি কর্পোরেশন এলেও তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। ’
তিনি বলেন, ‘সময়ের সংক্ষিপ্ততার কারণে স্যামসাং আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেনি। আমরা আশা করছি যে ৪টি কোম্পানি সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে তারা সবাই দরপত্র জামা দেবে। ’
গত বছরের ডিসেম্বরে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আগ্রহী ১০টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টির সংক্ষিপ্ত তালিকা করেছিল পেট্রোবাংলা। কোম্পানি ৪টি হলো ভারতের হিরানান্দিয়ানি, যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস অ্যাস্ট্রা ওয়েল অ্যান্ড এক্সিলারেট এনার্জি, দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংয়ের সিঅ্যান্ডটি কর্পোরেশন ও গোলার এলএনজি এনার্জি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জ্বালানি হিসেবে আমাদের দেশে এলএনজি একেবারেই নতুন। অধিকাংশ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ লাইন থাকায় এলএনজি সরবরাহ করা সহজ হবে। এলএনজিকে ফার্নেস অয়েলের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায় এখন ১৬ ডলারে যে পরিমাণ এলএনজি পাওয়া যায়, ফার্নেস অয়েলের ক্ষেত্রে তার দাম ২০ ডলারের উপরে। এছাড়া গত দুই বছরে ফার্নেস অয়েলের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। কিন্তু এলএনজির ক্ষেত্রে তা হয়নি।
এলএনজি আমদানির জন্য গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) মহেশখালী থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার সরবরাহ লাইন স্থাপন করবে। ভারতীয় মান কোম্পানির ৩ কোটি ৬৩ লাখ ২৩ হাজার ৭৭৫ ডলার দর প্রস্তাব বিবেচনা করে জিটিসিএল লাইন পাইপ সরবরাহ করার জন্য কোম্পানিটিকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করেছে।
এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটিও পরিকল্পনা কমিশনে আটকে আছে।
পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে দরপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়টি প্রাথমিকভাবে মনোনীত ৪ কোম্পানিকে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৩১ জানুয়ারি। প্রথম দফায় ৭৫ দিন বৃদ্ধি করে সময় নির্ধারণ করা হয় ১৫ এপ্রিল। এরপর তা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। সর্বশেষ ৩১ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিলো।
গত বছরের ডিসেম্বরে টার্মিনাল নির্মাণের জন্য আগ্রহী ১০টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টির সংক্ষিপ্ত তালিকা করে পেট্রোবাংলা।
প্রাথমিকভাবে বন্দর নগরীকে বাঁচানোর জন্য এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু পর্যায়ক্রমে সংকট নিরসনের জন্য সারাদেশে এলএনজি ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানাগেছে। এতে জ্বালানি তেল কম আমদানি করতে হবে। জাপান-ভারতসহ জ্বালানি সংকটে ভুগছে এমন অনেক দেশই এলএনজি আমাদনি করছে। পাকিস্তানও এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১২
ইএস/সম্পাদনা: আবু হাসান শাহীন, নিউজরুম এডিটর